ইউক্রেনের সংস্কৃতি বিষয়ক উপমন্ত্রী শুক্রবার বলেছেন, তার দেশের ঐতিহ্য রাশিয়ার আক্রমণের মুখে রয়েছে এবং সেগুলোকে অবশ্যই রক্ষা করা উচিত।
ইউক্রেনের সংস্কৃতি ও তথ্য নীতির উপমন্ত্রী কাতেরিনা চুয়েভা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, "রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট, পুতিন ঘোষণা করেছেন, ইউক্রেনীয় সংস্কৃতি এবং পরিচিতি এই যুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্যবস্তু।"
তিনি বলেন, রাশিয়ার বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র যেগুলি ইউক্রেনের শহরগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস করেছে, তারমধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক স্থাপনাও রয়েছে।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ২৪ ফেব্রুয়ারী রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে, এ পর্যন্ত ১৬৩টি সাংস্কৃতিক অবকাঠামোর ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় স্থান, এক ডজন জাদুঘর, ৩০টি ঐতিহাসিক ভবন, ১৭টি স্মৃতিস্তম্ভ এবং সাতটি গ্রন্থাগার। যেগুলোর অর্ধেকেরও বেশি খারকিভ এবং ডোনেটস্ক অঞ্চলে অবস্থিত । ইউনেস্কো বলছে, রাশিয়া রাজধানী কিয়েভের সাংস্কৃতিক স্থানগুলোরও যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করেছে।
চুয়েভা বলেন, সংখ্যাটা বস্তুত আরও অনেক বেশি। তিনি কাউন্সিলকে বলেন, তার মন্ত্রক নিশ্চিত করেছে, রাশিয়ার আগ্রাসনে কমপক্ষে ৪২৩টি বস্তু এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি এবং ধ্বংস হয়েছে।
কোনও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস নিশ্চিত যুদ্ধাপরাধ এবং সংঘাতে সাংস্কৃতিক সম্পত্তি রক্ষার জন্য প্রণীত ১৯৫৪ সালের হেইগ কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। দ্য হেইগ কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী দেশের মধ্যে রাশিয়াও রয়েছে।
চুয়েভা উল্লেখ করেছেন যে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধ্বংস শুধুমাত্র কাঠামো এবং বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
তিনি বলেন, "প্রত্যেক মানুষই সংস্কৃতি, জ্ঞান ও ঐতিহ্যের বাহক।"
ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারের ডিরেক্টর লাজারে ইলাউন্ডু অ্যাসোমো রাশিয়াকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্থানগুলো রক্ষায় সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি প্যারিস থেকে বলেন, সংস্থাটি কিইয়েভের সাথে সুরক্ষিত স্থানগুলিকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করার পদক্ষেপ নিতে কাজ করেছে এবং স্যাটেলাইট চিত্রসহ ক্ষতির রিপোর্টগুলি যাচাই করে দেখছে৷
ইউনেস্কো সাংস্কৃতিক সেক্টরে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে এবং ইউক্রেনকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পাচার প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে সহায়তা করারও পরিকল্পনা করছে। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।