ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরাইল হামাসের সাথে একটি সম্ভাব্য চুক্তিতে আগ্রহী, যদি কিছু শর্ত পূরণ করা হয়। কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার মধ্যে রোববার (১৮ মে) ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে এমনটা জানানো হয়েছে। খবর টাইমস অব ইসরাইল।
গাজায় নতুন করে জোরদার হামলার মধ্যে শনিবার (১৭ মে) দোহায় কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়।
রোববার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তির প্রস্তাবের পাশাপাশি গাজায় যুদ্ধের সমাপ্তির বিষয়ও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
বিবৃতি মতে, গাজায় স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহু কয়েকটি শর্ত দিয়েছেন। শর্তগুলো হলো- এক. হামাসকে সব জিম্মি মুক্তি দিতে হবে, দুই. তাদের সব সদস্যকে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং গাজা ছেড়ে চলে যেতে হবে।
বিবৃতি অনুযায়ী, ইসরাইলি প্রতিনিধি দল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকোফের সীমিত কয়েকজন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি অথবা সমস্ত জিম্মির মুক্তি ও হামাসের সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের বিনিময়ে স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে।
গাজায় গত ১৯ মাস ধরে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। এতে ভূমধ্যসাগরের পাড়ের এক সময়ের সাজানো-গোছানো ছোট্ট উপত্যকাটি কার্যত মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কয়েক লাখ মানুষ হতাহত হয়েছেন। ২০ লক্ষাধিক বাসিন্দা হয়েছে উদ্বাস্তু। ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের মধ্যে তারা এখন খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টানিয়ে থাকছে।
এর মধ্যেই গত শনিবার গাজার ‘কৌশলগত এলাকা’ দখল করতে এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে একটি বড় অভিযান শুরু করার ঘোষণা দেয় ইসরাইলি বাহিনী। ঘোষণা অনুযায়ী জোর হামলার মধ্যে এদিন দোহায় শুরু হয় যুদ্ধবিরতি আলোচনা।
আলোচনা শুরুর পর গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় আরও জিম্মির মুক্তির প্রস্তাব দেয় হামাস। একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে নয় ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নতুন প্রস্তাবিত চুক্তিতে প্রতিদিন ৪০০টি ত্রাণের ট্রাক প্রবেশ এবং গাজা থেকে রোগীদের সরিয়ে নেয়ার অনুমতি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে ইসরাইল বন্দি জিম্মিদের বেঁচে থাকার প্রমাণ এবং বাকি সকল জিম্মিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দাবি করেছে।