News update
  • Observe July Uprising Annually to Guard Against Autocracy     |     
  • Human Rights a Key Driver of Climate Change Progress     |     
  • Security measures at Shahjalal Airport enhanced     |     
  • Polls in early next year: Prof Yunus tells Marco Rubio      |     
  • Bangladesh’s Apparel Exports to US Hit $7.34bn in Decade     |     

সৌদি আরবে গৃহকর্মী নেয়ার সময় বীমা করতে হবে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিশেষজ্ঞ 2022-08-18, 9:17am

img_20220818_091601-b48b8c594f5346440d25bac8d19a58971660792660.png




সৌদি আরবের মিনিস্ট্রি অফ হিউম্যান রিসোর্সেস অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেখানে থাকা গৃহকর্মী ও তাদের নিয়োগ দাতাদের মধ্যকার চুক্তিতে ইনস্যুরেন্স বা বীমার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং খুব শিগগিরই সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়ার প্রক্রিয়া এখন চলছে।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন আল আকবারিয়াতে প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানে এ তথ্য দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি গেজেট পত্রিকা।

জেদ্দায় বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন ইনস্যুরেন্সের বিষয়টি খুবই ভালো একটি সিদ্ধান্ত যা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। এর বাস্তবায়ন হলে নিয়োগকর্তা ও গৃহকর্মী- দু পক্ষই সুরক্ষা পাবে।

বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সৌদি আরবে প্রায় তিন লাখের মতো গৃহকর্মী এখন কাজ করছে।

কিন্তু এখন এ ধরণের গৃহকর্মীদের জন্য বিশেষ কোন সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ কেউ যদি সেখানে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার সময় অসুস্থ হয় বা মারা যায় তার জন্য নিয়োগ দাতা বা রিক্রুটকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কোন অর্থ পাওয়া যায় না।

অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আসার পর এখানকার কল্যাণ তহবিল থেকে মারা যাওয়া বা অসুস্থ ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে সহায়তা করা হয়।

মিস্টার হক বলছেন ইনস্যুরেন্স সিস্টেম চালু হলে এসব ক্ষেত্রে গৃহকর্মীরা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি নিয়োগ দাতাদের জন্যও এতে সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে গৃহকর্মী নেয়ার জন্য চুক্তি হয়েছিলো। এর মাধ্যমে সাত বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়েছিলো।

সৌদি সরকার তখন দুই লাখের বেশি নারীকর্মীর চাহিদা জানিয়েছিলো। বিপরীতে বাংলাদেশ প্রতি মাসে দশ হাজার নারী গৃহকর্মী হিসেবে কাজের জন্য পাঠানোর কথা বলেছিলো।

এখন সব মিলিয়ে তিন লাখের মতো বাংলাদেশি গৃহকর্মী সেদেশে কাজ করছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছে।

কী আছে নতুন পরিকল্পনায়

সৌদি আরবে মূলত নিয়োগ দাতা ও গৃহকর্মীর মধ্যে যে চুক্তি হয় সেটি করা হয় দেশটির নিয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে।

নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা আসার পর ওই চুক্তিতেই ইনস্যুরেন্সের বিষয়টি উল্লেখ করা হবে এবং নিয়োগ দাতা ওই ইনস্যুরেন্সের প্রিমিয়াম শোধ করবেন।

এর ফলে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোন গৃহকর্মী চলে গেলে সেখান থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়োগ দাতাকে দেয়া হবে।

আবার কাজ করার সময় কোন গৃহকর্মী মারা গেলে বা অসুস্থ হলে ইনস্যুরেন্সের অর্থ থেকেই এককালীন টাকা ও চিকিৎসা সহায়তা বাবদ অর্থ পাবে।

সৌদি আরবের এখনকার নিয়ম অনুযায়ী একজন গৃহকর্মী কাজ শুরুর তিন মাসের মধ্যে চলে গেলেই কেবল তিনি রিক্রুটমেন্ট প্রতিষ্ঠান থেকে আরেকজন গৃহকর্মী পেয়ে থাকেন নতুন করে কোনো অর্থ দেয়া ছাড়াই।

কিন্তু গৃহকর্মী তিন মাস পরে যদি কাজ ছেড়ে দেন তাহলে নিয়োগ দাতাকে কোন বিকল্প দেয়া হয় না। আবার এজন্য কোন ক্ষতিপূরণও তিনি পান না। যদিও একজন গৃহকর্মীর জন্য সৌদি নিয়োগ দাতাকে যথেষ্ট অর্থ ব্যয় করতে হয়।

নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর এসব ক্ষেত্রে নিয়োগ দাতা ক্ষতিপূরণ পাবেন ইনস্যুরেন্সের টাকা থেকেই।

অন্যদিকে কোন নিয়োগ দাতা চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা গৃহকর্মীকে না দিলে গৃহকর্মী যদি অভিযোগ করে সেটি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে তিনি এই ইনস্যুরেন্সের টাকা থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন।

গৃহকর্মী বিষয়ে ইনস্যুরেন্সের এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত হচ্ছে সৌদি আরবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতায়।

ঢাকায় কর্মকর্তারা বলছেন এক বছর আগেই এমন একটি পরিকল্পনা করা হলেও শেষ পর্যন্ত সেটি চূড়ান্ত করা হয়নি। কিন্তু এবার সৌদি কর্তৃপক্ষ এটি চূড়ান্ত করে এনেছেন এবং যে কোন সময়েই এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে।

এটি হলে যে রিক্রুটমেন্ট অফিসের মাধ্যমে নিয়োগকর্তা ও গৃহকর্মীর চুক্তি হয় তারাই ইনস্যুরেন্সের জন্য নিয়োগ দাতাকে প্রতি মাসে কী পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে সেটি জানিয়ে দেয়া হবে।

একই সাথে ইনস্যুরেন্স সম্পর্কিত তথ্যগুলো চুক্তিপত্রেও সংযোজিত থাকবে। যাতে করে নিয়োগ দাতা ও গৃহকর্মী-উভয়ের স্বার্থই রক্ষিত হতে পারে।

প্রসঙ্গত, সৌদি আরবে যাবার ক্ষেত্রে নারীকর্মীদের সমস্ত খরচ বহন করে সৌদি নিয়োগকারী সংস্থা।

কিন্তু গৃহকর্মীদের নির্যাতনসহ নানা ধরণের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছিলো ফেরত আসা কিছু কর্মীদের দিক থেকে।

যদিও গৃহকর্মীর কাজের প্রতি বাংলাদেশী নারীদের আকৃষ্ট করতে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে বিনা খরচে এক মাসের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া নারীকর্মীদের বিদেশে পাঠানোর আগে স্বল্প খরচে বাংলাদেশে সরকারি ২৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আরবি ভাষা, গৃহস্থালীর কাজকর্ম এবং সৌদি নিয়মকানুন শেখানো হয়।

এরপরেও সৌদি আরবে কাজের সময়ে মারা গেলে বা কেউ অসুস্থ হলে তাদের জন্য ইনস্যুরেন্স প্রথা দারুণ উপকারী হবে বলে বলছেন কর্মকর্তারা। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।