মারাত্মক পানিবাহিত রোগ টাইফয়েড ‘সালমনেলা টাইফি’ ও ‘প্যারাটাইফি’ জীবাণু থেকে হয়ে থাকে। দূষিত পানি বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর বাহক হিসেবে কাজ করে। এতে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, আমাশয়, কলেরা, ও কৃমিসহ নানা ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে হয়।
টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে?
টাইফয়েড জ্বর চিকিৎসা শুরু করার পরও ১ সপ্তাহ থেকে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকবে তা রোগীর শারীরিক অবস্থা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং চিকিৎসার উপর নির্ভর করে। অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা শুরু করার পর ৫-৭ দিনের মধ্যে জ্বর কমতে শুরু করে।
তবে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। টাইফয়েড জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্যে দ্রুত চিকিৎসা (১ম সপ্তাহ থেকে ২য় সপ্তাহ) শুরু করতে হবে অন্যথায় যদি (৩য় সপ্তাহে) চিকিৎসা শুরু করা হয় তখন সেখানে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা যায়।
টাইফয়েড জ্বর দীর্ঘস্থায়ী কেন হয়?
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাদের শরীর টাইফয়েড জীবাণুকে দমন করতে ব্যর্থ হয়। ফলে সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয় তাই জ্বরও দীর্ঘস্থায়ী হয়।দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে অন্যান্য সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায় যা টাইফয়েড জ্বরকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
২. অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টান্স
বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছা প্রয়োগের ফলে অনেক ব্যাকটেরিয়া এখন অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টান্স হয়ে উঠেছে তাই কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক এখন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে তার কার্যকরীতা গড়ে তুলতে পারছে না। এজন্য জ্বরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে
৩. সঠিক চিকিৎসার অভাব
যদি ভুল ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটি টাইফয়েড জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকরী নাও হতে পারে। কিংবা চিকিৎসা শুরু করতে বিলম্ব করলে টাইফয়েড রোগ সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হয় না এবং পুনরায় সংক্রমণ হতে পারে।
৪. অপর্যাপ্ত ডোজ
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়া হলে বা অর্ধেক পরিমাণে খেয়ে খাওয়া ছেড়ে দিলে টাইফয়েড জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে। ফলে পরবর্তীতে সেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধটি আর কাজ করতে পারে না, পরবর্তীতে এই জীবাণুগুলো বংশবিস্তার করে এবং সংক্রমণ আবার শুরু হয়ে যায়।