জাতিসংঘের একজন মানবাধিকার পর্যবেক্ষক বৃহস্পতিবার আফগানিস্তান সফরকালে বলেছেন, নারীদের উপর তালেবান সরকারের বিধিনিষেধের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের আফগান সমাজে "অদৃশ্য" করে তোলা। গত বছর তালেবানরা ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলার জন্য নারীদের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিশোরী মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, নারীদের কিছু সরকারি চাকরি না করতে বাধ্য করা এবং একাকী ভ্রমণে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই মাসে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা এবং তালেবান প্রধান হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা জনসমক্ষে নারীদেরকে মুখমন্ডলসহ তাদের শরীর সম্পূর্ণরূপে ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আফগানিস্তানে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ রিপোর্টার রিচার্ড বেনেট কাবুলে সাংবাদিকদের বলেছেন, এই নীতিগুলি কার্যত: নিরঙ্কুশ লিঙ্গ বৈষম্যবাদেরই নমুনা এবং সমাজে নারীদের অদৃশ্য করে তোলাই এর লক্ষ্য। বৃহস্পতিবার তালেবান যোদ্ধারা মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় পুনরায় চালু করার দাবিতে নারীদের বিক্ষোভ ভেঙে দেওয়ার সময় তার মন্তব্য এসেছে। সমাবেশের একজন সংগঠক মুনিসা মুবারিজ এএফপিকে বলেন, “বিক্ষুব্ধ তালেবান বাহিনী এসে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়”।
গত বছরের আগস্টে ক্ষমতা নেওয়ার পর, তালেবান প্রশাসন এবছরের মার্চ মাসে প্রথমবারের মতো মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলার মাত্র কয়েক ঘন্টা পরেই, মেয়েদের সমস্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সরকার এখনও এই সিদ্ধান্তের সুস্পষ্ট কারণ জানাতে পারেনি, তবে কর্মকর্তারা দাবি করেন যে প্রতিষ্ঠানগুলো শীঘ্রই আবার চালু হবে।
বিদেশি সরকারগুলি জোর দিয়ে বলেছে যে তালেবানের মানবাধিকারের রেকর্ড, বিশেষ করে নারীদের অধিকার, আফগান প্রশাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কিনা, তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হবে। আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক হস্তক্ষেপের দুই দশকের সময়টাতে, গভীরভাবে পিতৃতান্ত্রিক এই দেশে নারীরা সামান্য অর্জন করেছিল। প্রাথমিকভাবে কিছু আফগান নারী শিক্ষা ও কাজের অধিকারের দাবিতে ছোট ছোট বিক্ষোভ করেছিল, তবে নতুন তালেবান নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তাদের পিছু হটতে হয়। কট্টরপন্থীরা শীঘ্রই রিংলিডারদের ধরে নিয়ে যায়, তাদের আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে। তাদের মুক্তির পর থেকে বেশিরভাগই নীরব হয়ে যায়। তথ্য সূত্র বাসস।