News update
  • Air Force training fighter jet crashes in Ctg; 2 pilots rescued      |     
  • Palestinians flee chaos and panic in Rafah     |     
  • Seven villagers die in DR Congo attack blamed on rebels     |     
  • 8 injured in Ukrainian attack on Russia's Belgorod: governor     |     
  • Brazil flooding death toll surpasses 100     |     

নেপালের জলবিদ্যুৎ কিনছে ভারত, অপেক্ষায় বাংলাদেশ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিদ্যুৎ 2024-04-27, 3:14pm

sfsdfdfdssd-8979b0ef839f56e73311c32593f6f75a1714209303.jpg




বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও নেপাল প্রায় দশ বছর ধরে আলাপ আলোচনার মধ্যে থাকলেও এখনো কোনো চুক্তি এবং তার সফল বাস্তবায়ন হয়নি।

সবশেষ ভারত-বাংলাদেশ গ্রিড লাইনের মাধ্যমে নেপাল থেকে মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার যে চুক্তি এপ্রিল মাসে সম্পাদনের কথা ছিল সেটিও পিছিয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশ আশা করছে খুব শিগগিরই এই চুক্তি সম্পাদন করে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ ও নেপাল বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে ২০১৪ সালে প্রথম একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

ওই সমঝোতার আওতায় দুই দেশের মধ্যে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ আমদানির এমনকি নেপালে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাংলাদেশের বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা শুরু হয়।

বাংলাদেশ যখন নেপালের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে তখন নেপালে বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল। বর্তমানে নেপাল বর্ষা মৌসুমে চাহিদার তুলনা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে এবং বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতে রপ্তানি শুরু করেছে।

এছাড়া সম্প্রতি নেপাল থেকে ভারতে ৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুত রপ্তানির আলাদা দুটি চুক্তি সই হয়েছে। একই সঙ্গে জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে নেপাল থেকে ভারতে আগামী দশ বছরে আরো দশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির পরিকল্পনা ঘিরে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা এবং কাজ শুরু হয়েছে।

নেপালে বাংলাদেশের আগ্রহ

বাংলাদেশ গত দশ বছরে নেপালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানি, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ, সঞ্চালন লাইন নির্মাণসহ ৫টি বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে একটি ক্ষেত্রেও চুক্তি সই করে এর সফল বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

এসময়ে বাংলাদেশ ভারত থেকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চুক্তি করে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করেছে। এখন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত বহররমপুর-ভেড়ামার এইচভিডিসি গ্রিড লাইন দিয়ে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি শুরু করতে চায় বাংলাদেশ।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বিদ্যুৎ খাতে নেপাল-বাংলাদেশ সহযোগিতার আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নিয়েছেন।

নেপালের সঙ্গে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, “আপার কার্নালি পাওয়ার প্ল্যান্ট যেটা ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর ডেভেলপ করছে, সেটা থেকে পাঁচশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য প্রথম যে প্রক্রিয়া শুরু করি সেটা অনেকদূর এগিয়েছে।''

''আমাদের জিএমআর’র সাথে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন। এর মাঝে আবার চল্লিশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যেটা আমরা ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে আমদানি করবো সেটাও সবকিছু চূড়ান্ত। এ পর্যায়ে আমরা আছি।”

মি. হোসেন বলেন, ''যেহেতু ভারতের বর্ডার এবং গ্রিড ব্যবহার করতে হবে। সে কারণে ইন্ডিয়ার রুলস রেগুলেশন বা তাদের যে ক্রসবর্ডার গাইডলাইন বা ক্রসবর্ডার যে পলিসি সেটাকে মেইনটেইন করেই করতে হবে।''

''টেকনিক্যাল কমার্সিয়াল ইস্যুগুলো আমরা দেখবো কিন্তু এগুলোর ওভারঅল যেহেতু একটা দেশের সঙ্গে আরেকটা দেশের বা তিনটা দেশের বিষয় তাই এখানে কূটনীতির একটা বড় ভূমিকা রয়েছে।”

জলবিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি নেপালের ৬৮৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার সুনকোসি-৩ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।

এছাড়া বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল-বাংলাদেশ ৪শ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন তৈরি করতেও দুই দেশ আলোচনা করছে। বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে ভারত-নেপাল বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় একটি ব্যবস্থাও চায় বাংলাদেশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন জ্বালানি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অগ্রগতি দেখা গেলেও ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে আছে দীর্ঘসূত্রিতা।

বাংলাদেশের সঙ্গে যেহেতু নেপাল বা ভুটানের কোনো সীমান্ত নেই, তাই আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য ভারতের সমর্থন বাংলাদেশের একান্ত প্রয়োজন।

গতি আসবে কীভাবে?

বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বিবিসিকে বলেন, ভারত ত্রিপক্ষীয় কোনো চুক্তির চেয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে বেশি আগ্রহী হবে এটাই স্বাভাবিক। যে ৪০ মেগাওয়াট আমদানির কথা বলা হচ্ছে এটা খুবই সামান্য বাংলাদেশের চাহিদার তুলনায়। নেপাল-ভুটানে সম্ভাবনা আরো অনেক বেশি রয়েছে।

“আগে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে যে তাদের ওপর দিয়ে আমরা বিদ্যুৎ নিয়ে আসতে পারবো নেপাল থেকে ভুটান থেকে। এটা না করা পর্যন্ত এমওইউ, চুক্তি অথবা এগ্রিমেন্ট কোনো ফলদায়ী হবে না।''

''ভুটানও কিন্তু কখনোই আমাদের সঙ্গে নেগোসিয়েট করতে পারেনি কারণ তারা জানে যে ভারত এখানে মূল ভূমিকা পালন করবে এবং পাওয়ার ট্রেড যেটা নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু হয়ও, সেটা কিন্তু আলটিমেটলি আমরা সবাই জানি যে ভারতের ওপর নির্ভর করবে। কারণ লাইনটাতো আসতে হবে ভারতীয় ভূখণ্ডের উপর দিয়ে। এবং সেক্ষেত্রে ভারত টার্মস ডিটারমিন করতে পারবে।”

মি. হোসেন মনে করেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতায় বাংলাদেশের জন্য ভারত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যেকোনো বিষয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কারিগরি এবং দাপ্তরিক কাজের বাইরে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলছেন, “এখানে মূল জিনিসটা হবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব। ভারতের এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব বাংলাদেশের এই দুই নেতৃত্ব মিলে একমত হতে হবে যে আমরা এই শর্তে এইভাবে এই জিনিসটা করবো।''

''আমলাতান্ত্রিক কিছু জটিলতা থাকতে পারে সেগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে, টেকনিক্যাল কিছু বিষয় থাকতে পারে। সেটা এ দেশের, ওই দেশের এবং সেদেশের ইঞ্জিনিয়াররা মিলে ঠিক করতে পারবে কিন্তু মূল জিনিসটা হচ্ছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।”

আশাবাদী বাংলাদেশ

নেপাল বা ভুটান থেকে বড় পরিসরে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হলে ভারতের সহযোগিতা এবং সমর্থন ছাড়া সম্ভব নয়। তবে ভারতের তরফ থেকে জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস রয়েছে বলেই জানাচ্ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিবিসিকে বলেন, নেপালের সঙ্গে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার প্রকল্পগুলোতে ভারতের সমর্থন পাবে বাংলাদেশ।