News update
  • “Everyone with a TIN certificate should be under tax net”     |     
  • “Kwatra’s visit is expected to further strengthen bilateral ties”     |     
  • Clash over trifling matter leaves 3 dead in Habiganj     |     
  • India interested to finance BD’s Teesta project: Hasan Mahmud     |     
  • Nine killed in northwest China's traffic accident     |     

হার্ভার্ড থেকে ইয়েল, ফিলিস্তিনের পক্ষে আমেরিকার যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংঘাত 2024-04-27, 3:17pm

uiuduasud-60ab2344b89101489614f8ce57be55161714209481.jpg




যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল। ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কিত কোম্পানি এবং ব্যক্তিদের বয়কট করার আহবান জানানো হচ্ছে।

গত ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং সেটির জের ধরে ইসরায়েলে গাজায় যে হামলা চালাচ্ছে তাতে এখনো পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে ক্রমশ।

এ ধরণের বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। এরপর থেকে অন্যান্য জায়গাও বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।

লস অ্যাঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়া এবং আটলান্টায় বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

টেক্সাসের অস্টিনে সেখানকার গভর্নর ট্রুপারদের নির্দেশ দিয়েছে বিক্ষোভকারীদের আটক করতে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ চলছে।

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সর্বপ্রথম বড় ধরণের বিক্ষোভ হয় কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। যেসব বিশ্ববিদ্যালকে ইহুদি বিদ্বেষের জন্য অভিযুক্ত করা হয় তার মধ্যে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম।

গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দেবার জন্য বললে ১০০’র বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেসে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টকে। এরপর ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে অণুরোধ করেন তিনি।

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে গ্রেফতারের ঘটনা বিক্ষোভকে আরো উসকে দেয়।

আটককৃতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিনিধি ইলহান ওমরের কন্যাও রয়েছেন। ইলহান ওমর বিবিসিকে বলেন, বিক্ষোভ শুরু করেছিল হাতে গোনা কিছু শিক্ষার্থী। কিন্তু গ্রেফতারের ঘটনার পর সেটি বেশ দ্রুত ছড়িয়ে যায়।

“এই বিক্ষোভ শুরু করেছিল মাত্র ৭০ জন শিক্ষার্থী,” বিবিসি নিউজকে বলেন ইলহান ওমর।

“কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি যেহেতু তাদের ধরপাকড় করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করেছে, সেজন্য এটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে,” বলেন ইলহান ওমর।

এমোরি ইউনিভার্সিটি

বৃহস্পতিবার সকালে আটলান্টায় কিছু বিক্ষোভকারী এমোরি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এসে তাঁবু খাটিয়ে বসে যায়। তারা ইউনিভার্সিটির সাথে সম্পর্কিত নয়।

কর্তৃপক্ষ বলছে, পরবর্তীতে বহিরাগতদের সাথে ইউনিভার্সিটি কমিউনিটির সদস্যরাও যোগ দেয়। বিক্ষোভকারীরা যখন সে স্থান ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানায় তখন কিছু বিক্ষোভকারীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।

যাদের আটক করা হয়েছে তাদের সংখ্যা কত এবং তারা কোন ধরণের বিচারের মুখোমুখি হবে সেটি পরিষ্কার করেনি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ।

ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া

সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ সেখানে কমেন্সমেন্ট অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটিতে ভালো ফলাফল অর্জন করা একজন শিক্ষার্থীর ভাষণ বাতিল করেছে। পরবর্তীতে আগামী ১০ই মে অনুষ্ঠিতব্য কমেন্সমেন্ট অনুষ্ঠানও বাতিল করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কমেন্সমেন্ট হলো এমন একটি অনুষ্ঠান যেটি আয়োজন করা হয় গ্র্যাজুয়েটসদের সম্মাননা জানানোর জন্য।

এই কমেন্সমেন্ট অনুষ্ঠান বাতিল করার পর ক্যাম্পাসে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। সে অনুষ্ঠানে ৬৫ হাজার মানুষ অংশ নেবার কথা ছিল।

ইউনিভার্সিটিতে ভালো ফলাফল অর্জনকারী সে শিক্ষার্থী, যাকে ভ্যালিডিক্টোরিয়ান বলা হয়, তিনি ওয়েবসাইটে ইসরায়েল বিরোধী একটি পোস্ট দিয়েছেন। এই শিক্ষার্থী একজন মুসলিম। এই পোস্টকে ইহুদি বিদ্বেষ হিসেবে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।

ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে হুমকি থাকার কারণে এটি বাতিল করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ সেই শিক্ষার্থীর পোস্টকে নিন্দা করেনি।

কিন্ত এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল-পন্থী উভয় শিক্ষার্থীকে ক্ষুব্ধ করেছে।

ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করা শিক্ষার্থীরা দাবি জানাচ্ছেন, সেই শিক্ষার্থীকে যেন বক্তৃতার সুযোগ দেয়া হয়। অন্যদিকে ইসরায়েলের পক্ষে যারা আছেন তারা বলছেন, ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে এই পোস্টের নিন্দা জানাতে হবে।

এমন অবস্থায় বুধবার লস এঞ্জেলেস পুলিশকে ডাকা হয়েছিল এবং তারা ৯৩ জনকে আটক করেছে।

জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি

পুলিশ বলছে, বুধবার রাতে অস্টিনে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে ৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

টেক্সাসের পাবলিক সেইফটি ডিপার্টমেন্টের সৈন্যদের দেখা গেছে তারা সুসজ্জিত হয়ে তাদের বাইক দিয়ে বিক্ষোভকারীদের পেছনের দিকে ঠেলছে।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট রিপাবলিকান দলের একজন সদস্য। তিনি পাবলিক সেইফটি ডিপার্টমেন্টের সৈন্যদের তলব করেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’ প্লাটফর্মে তিনি লিখেছেন, বিক্ষোভকারীরা ইহুদি বিদ্বেষী এবং তাদের বহিষ্কার করার দাবি করেন তিনি।

ডেমোক্রেট সদস্যরা অভিযোগ করছেন, গভর্নর তার প্রচারণার জন্য এই গণ-গ্রেফতারের বিষয়টি ব্যবহার করছেন।

টেক্সাসের ন্যাশনাল গার্ড এক বিবৃতিতে অস্বীকার করেছে যে ক্যাম্পাসে গ্রেফতার করার জন্য তারা সৈন্য জড়ো করেছিল।

“গতকাল ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে বিক্ষোভের বিষয়ে টেক্সাস ন্যাশনাল গার্ড অবহিত ছিল এবং পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তৈরি ছিল। বিক্ষোভের সময় কোন সৈন্যকে ক্যাম্পাসে পাঠানো হয়নি,” টেক্সাস মিলিটারি ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি

গত সোমবার নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ম্যানহাটন ক্যাম্পাসে কিছু বিক্ষোভকারী তাৎক্ষনিকভাবে তাবু টানিয়ে বসে যায়। সেখান থেকে পুলিশ ১২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে চারজনকে বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি

বুধবার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি চত্বরে একদল শিক্ষার্থী অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে বসে বিক্ষোভ শুরু করে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হার্ভার্ড আন্ডারগ্র্যাজুয়েটস প্যালেস্টাইন সলিডারিটি কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে। তবে পুলিশ ডেকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে অস্বীকৃতি জানান হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট।

অন্যান্য ইউনিভার্সিটি

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় আরো আরো অন্তত ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়া কিছু হাইস্কুলেও বিক্ষোভ হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে বোস্টনের এমারসন ইউনিভার্সিটিতে ১০৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বাতিল করতে হয়েছে। বিক্ষোভের সময় চারজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।

কানেকটিকাটের ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে বুধবার ৪৮জনকে গ্রেফতার করা হলেও সেখানে এখনো বিক্ষোভ চলছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে চারজন ছাড়া বাকি সবাই ইয়েল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার সিয়াটলে হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা যুদ্ধের প্রতিবাদে শ্রেণীকক্ষ থেকে বের হয়ে আসে। এদিকে শুক্রবার নিউ জার্সির হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা একটি পদযাত্রার আয়োজন করেছে। শিক্ষার্থীরা যাতে সেখানে যোগ না দেয় সেজন্য নিউ জার্সির স্কুল কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে সতর্কবার্তা দিয়েছে।