ড্রাই ফুড হিসেবে সকালে খালি পেটে কুমড়ার বীজ অনেকেই খান। এটি খেলে কী হয় জানেন? শরীরে প্রচুর ক্যালোরি পাওয়া যায়। যা সারাদিনের কর্মশক্তি বাড়াতে কাজ করে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়মিত এটি খাওয়ার রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের প্রতিদবেদন থেকে জানা যায়, কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস কপার, ভিটামিন ই, আয়রন ও ফাইবার। তাই নিয়মিত এ বীজ খাওয়া শরীরের জন্য জরুরী।
শরীরে ‘পাওয়ার হাউস’ হিসেবে কাজ করে কুমড়ার বীজ। প্রতি ১০০ গ্রাম কুমড়ার বিচিতে প্রায় ৫৬০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। নানা পুষ্টিগুলে ভরপুর হওয়ায় এ বীজে রয়েছে অসংখ্য জাদুকরী শক্তি।
তাই এ বীজ খাওয়ার গুরুত্ব প্রসঙ্গে মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী বলছেন, একজন সুস্থ ব্যক্তির প্রতিদিন ১৫টি থেকে ২০টি নিয়মিত কুমড়ার বীজ খাওয়া জরুরী।
আসুন এক নজরে জেনে নিই, খালি পেটে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-
১। পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ভিটামিন (যেমন ভিটামিন ই), এবং মিনারেল (যেমন ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা এবং লৌহ) রয়েছে।
২। এতে থাকা স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
৩। মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে থাকা দস্তা (জিঙ্ক) ইমিউন সিস্টেম মজবুত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪। এর ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস হাড়ের গঠন মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
৫। মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে ট্রিপ্টোফ্যান নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা সেরোটোনিন তৈরিতে সাহায্য করে। এটি মানসিক চাপ কমায় এবং ভালো ঘুম আনতে সাহায্য করে।
৬। মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে ভিটামিন ই এবং অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যা কমায়।
৭। মিষ্টি কুমড়ার বিচির গ্লাইকেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। তাই ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে এটি ভালো কাজ করতে পারে।
৮। এতে ফাইবার থাকায় পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার সমাধানে ভালো কাজ করতে পারে।
৯। মিষ্টি কুমড়ার বীজের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণেও এটি ভালো কাজ করে।
১০। এ বীজ চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করতে পারে।
কুমড়ার বীজকে ড্রাই ফুড করার উপায়
বীজ বা বিচি খেতে কুমড়া থেকে তা আলাদা করে একটি প্লেটে ছিটিয়ে রাখুন। নিয়মিত রোদে শুকাতে দিন। কিংবা চুলার নিচে রাখুন। ঝরঝরে হলে ফ্রাইপ্যানে তেল ব্রাশ করে হালকা ভিজে নিতে পারেন। সকাল এবং বিকালের নাস্তায় কুমড়ার বীজ ড্রাই ফুড হিসেবে দারুণ উপকারী।
অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে এটি খাওয়া এড়িয়ে চলুন। মিষ্টি কুমড়ার বীজে প্রচুর ক্যালোরি থাকায় এটি বেশি পরিমাণে কখনও খাবেন না। একজন প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য ১৫ থেকে ২০টি বীজই যথেষ্ট বলে মনে করছেন পুষ্টিবিদরা।