সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ব্যান্ডউইথ কেনা এবং সঞ্চালনে খরচ কমেছে মোবাইল অপারেটরদের। অথচ গ্রাহককে ডাটা কিনতে হচ্ছে আগের দামেই। কারণ হিসেবে মোবাইল অপারেটররা বলছে, সরকারের ঘোষণা মেনে বৃহৎ দুই প্রতিষ্ঠান সামিট এবং ফাইবার অ্যাট হোম তাদের ক্ষেত্রে কোনও খরচ কমায়নি। এর সত্যতা স্বীকার করেছে সামিট। তবে ফাইবার অ্যাট হোম বলছে, ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল-উভয় সেবায় খরচ কমানো হয়েছে।
দেশের ১৩ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে গত ২২ মার্চ ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ দাম কমায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি। এরপর আন্তর্জাতিক গেটওয়ে স্তরে ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ এবং সঞ্চালন পর্যায়ে ১৫-২০ শতাংশ খরচ কমানোর ঘোষণা দেয়, এ খাতের বৃহৎ দুই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোম এবং সামিট কমিউনিকেশন্স।
তিন স্তরে খরচ কমায় মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের দাম কমাতে বারবার তাগাদা দিচ্ছে সরকার। তাতে সাড়া নেই। এতে আগের দামেই মোবাইল ডাটা কিনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। তারা জানান, ইন্টারনেটের দাম পূর্বে কয়েক ধাপে বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। এই দাম কমানো উচিত।
অপারেটর সূত্র বলছে, আইআইজি পর্যায়ে প্রতি এমবিপিএস ব্যান্ডউইথে বিটিআরসি নির্ধারিত দাম ৩৫০ টাকা হলেও আইএসপিরা কিনে ২শ' টাকায়। আর মোবাইল অপারেটররা কিনে ১৫০-১৬০ টাকায়। ব্যান্ডউইথ কেনা কিংবা সঞ্চালনে ফাইবার অ্যাট হোম ও সামিট খরচ কমানোর ঘোষণার দুই সপ্তাহ পার হলেও এ খরচের কোনো হেরফের হয়নি বলে দাবি মোবাইল অপারেটরদের।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, দাম কমানোর কোনো নির্দেশনা পাইনি। পেলে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হবে।
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, দাম কমানোর ঘোষণার কথা শুনেছি। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি।
অপারেটরের বক্তব্যের সত্যতা মিললো সামিট কমিউনিকেশন্স এর বিবৃতিতে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, মোবাইল নয়; শুধু ব্রডব্যান্ড সেবায় ব্যান্ডউইথ এবং সঞ্চালন খরচ কমানো হয়েছে। অবশ্য ফাইবার অ্যাট হোম বলছে, ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল সেবায় কার্যকর হয়েছে নতুন দর।
ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ গভর্নমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার আব্বাস ফারুক বলেন, ঘোষণা দেয়ার পর থেকে নতুন দর কার্যকর করা হয়েছে। শুধু মোবাইল নয়, আমাদের সকল গ্রাহকই সুবিধা পাচ্ছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, এ বিষয়ে কাজ চলছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ এখনও মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এটির দাম কমাতে হবে। এ বিষয়ে কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, দেশে ব্যান্ডউইথ আমদানি করে ৭টি আইটিসি প্রতিষ্ঠান। পাইকারিভাবে তা বিক্রি করে ৩৪টি আইআইজি অপারেটর। আর ফাইবার সেবা দেয় ছয় প্রতিষ্ঠান। এই তিনটি সেবাই দেয় সামিট এবং ফাইবার অ্যাট হোম। সময়