News update
  • Hadi is no more, state mourning on Saturday: CA     |     
  • Bangladesh capital market falls; weekly turnover lowest     |     
  • Sharif Osman Hadi No More     |     
  • Tarique Rahman to Return Home With Daughter on Dec 25     |     
  • ILO praises Bangladesh’s labour reforms, new milestones     |     

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্যে ভারতের কড়া সমালোচনা

বিবিসি বাংলা কুটনীতি 2025-04-18, 6:59pm

rewrwerq-13fca336bfdc2758581762d971aef7aa1744981161.jpg




ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের 'পূর্ণ নিরাপত্তা' নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের আহ্বানের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দিল্লি। তারা বলছে, 'অযৌক্তিক' ও 'গোপন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' মন্তব্য না করে বাংলাদেশের বরং নিজেদের সংখ্যালঘুদের রক্ষায় আরও মনোযোগ দেয়া উচিত।

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ওই আহ্বান জানানো হয় বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের কাছে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই অবস্থান তুলে ধরেন।

"আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই," বলেন শফিকুল আলম।

শুক্রবার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি পোস্ট করা হয়।

সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের বরাত দিয়ে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে করা মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করছে ভারত।

"বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের সমান্তরাল একটা রূপ দেয়ার প্রচ্ছন্ন ও গোপন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চেষ্টা এটি," বলেন তিনি।

বাংলাদেশে এই ধরনের অপরাধের (সংখ্যালঘু নির্যাতন) জন্য দায়ীরা "মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে" বলেও উল্লেখ করেন মি. জয়সওয়াল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, "অযৌক্তিক মন্তব্য এবং ভালো সাজার চেষ্টা না করে, বাংলাদেশ তার নিজ সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দিকে মনোনিবেশ করলে বরং আরও ভালো করবে।"

বাংলাদেশ যা বলেছিল

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে গত সপ্তাহে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে, তাতে 'বাংলাদেশি দুষ্কৃতকারী' জড়িত থাকার অভিযোগ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। একইসঙ্গে ওই সহিংসতার জন্য ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং বিজেপিকেও দায়ী করেছেন তিনি।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মমতা ব্যানার্জী বলেন, "আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? আপনি ইউনূসের সঙ্গে গোপন মিটিং করুন, চুক্তি করুন। দেশের ভালো হলে খুশি হব। কিন্তু আপনাদের প্ল্যানিংটা কী? কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ওখান থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা?

এভাবে 'বাংলাদেশকে জড়ানোর চেষ্টার' তীব্র প্রতিবাদ জানায় অন্তর্বর্তী সরকার।

একইসাথে প্রতিবেশী দেশটিকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের 'পূর্ণ নিরাপত্তা' নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।

বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের কাছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই অবস্থান তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, "মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো চেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি।"

বাংলাদেশ সরকার মুসলিমদের ওপর হামলা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তা হানির ঘটনার নিন্দা জানায় বলে উল্লেখ করেন মি. আলম।

তিনি বলেন, "আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।"

সংখ্যালঘু ইস্যুতে দুই দেশের টানাপোড়েন

ভারতে মুসলিম ওয়াকফ সম্পত্তি কীভাবে চিহ্নিত ও নিয়ন্ত্রিত হবে, সেই সব আইনকানুনের আমূল পরিবর্তন করে লোকসভায় একটি বিতর্কিত বিল পাস হয় গত তেসরা এপ্রিল। পরদিন (৪ঠা এপ্রিল) বিলটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার অনুমোদন পায়।

আইনের বিরুদ্ধে ভারতের নানা প্রান্তে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দানা বাঁধে।

গত সপ্তাহে মুসলিম-অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলি জেলায় এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে।

১২ই এপ্রিল মুর্শিদাবাদে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

ভারতের ওয়াকফ আইন ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা দেখা যায়।

গত বছরের পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন ক্রমশ স্পষ্ট হতে থাকে।

জনসাধারণ পর্যায়েও সম্পর্কের একটা বড় অবনতি হয়েছে।

একদিকে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংখ্যালঘু এবং হিন্দুদের ওপর হামলা এবং অত্যাচারের নানা রকম তথ্য, অপতথ্য এবং গুজব ব্যাপকভাবে প্রচার হতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে, অভ্যুত্থানকারী ছাত্রনেতা এবং বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায় ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তিগুলো থেকে ভারত যে যে বার্তা পেয়েছে সেটি নিয়ে তাদের অস্বস্তি আছে।

এছাড়া, সীমান্ত ইস্যু, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্সসহ বিভিন্ন দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য বিবৃতিও চলে আসছে।

সেসবের ধারাবাহিকতায় নতুন উপাদান যুক্ত করলো সংখ্যালঘু ইস্যুতে দুই দেশের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য।