আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় কমাচ্ছে সরকার। যেটির পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাস্থ্যখাতে জাতীয় বাজেটের ১০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দরকার। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যয় করার জায়গায় দক্ষতা না থাকলে বরাদ্দ বাড়িয়ে লাভ নেই। সেবার মান বাড়াতে টেকসই উন্নয়ন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় জোর দিচ্ছেন তারা।
স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সব শ্রেণির মানুষ। ঊর্ধ্বমুখী রোগীর সংখ্যা। চাপ বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। তথ্য বলছে, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগেই মারা যাচ্ছে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ।
জনগণকে যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বাজেটে দেশের জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ ব্যয় করার সুপারিশ রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার। চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় এই বরাদ্দ মোট বাজেটের ১০ শতাংশে রাখা প্রয়োজন। গুরুত্ব দিতে হবে রোগীর ব্যয় কমাতে।
ঢাকার আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড. ছেহেলী নার্গিস বলেন, এখন ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চরক্তচাপে ভোগা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগ প্রতিকার ও প্রতিরোধে নজর দিতে হবে। কারণে এসব রোগের কারণে মানুষের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
তবে গবেষণা বলছে, বরাদ্দ বাড়ালেও প্রায় এক তৃতীয়াংশ অর্থ খরচ করতে পারে না মন্ত্রণালয়। দুর্নীতি, সক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার না হওয়া, জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির ফলে এমন পরিস্থিতি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের একটি বড় অংশ রিভাইজড বাজেটের সময় কমিয়ে ফেলা হয়। তারপরও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাদ্দের টাকা পুরোটা খরচ করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, তবে যেটুকু অর্থ খরচ করা হচ্ছে সেটি যেন যথাযথভাবে খরচ করা হয়, তা প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে। এরপর পুরোটা বরাদ্দ ব্যবহারে চেষ্টা করতে হবে। তারপর বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করতে হবে। এর আগে নয়।
চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপিতে) স্বাস্থ্য প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করতে না পারায় আগামী অর্থবছরও কমছে বরাদ্দ। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা কমিয়ে প্রকল্প ব্যয়ে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। সময়।