কক্সবাজারে আয়োজিত ডিসি (জেলা প্রশাসক) গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ এর ফাইনাল ম্যাচটি দর্শকদের তাণ্ডবে পণ্ড হয়ে গেছে। এতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ছোটাছুটিতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে স্টেডিয়ামের মূল ভবন, গ্যালোরিসহ সব কিছু।
দর্শকদের অভিযোগ, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ৬ গুণ টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। আর ওই সময় টিকিট বিক্রি হয়েছে অতিরিক্ত মূল্যে। দর্শকদের বসার স্থান না থাকায় বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত।
কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ টুর্নামেন্টের ফাইনাল ছিল আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর)। রামু ও টেকনাফ উপজেলা একাদশের মধ্যে বেলা ৩টায় ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৭টা থেকে স্টেডিয়ামে গিয়ে টিকিট সংগ্রহ শুরু করেন দর্শকরা। টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও দর্শকের উপস্থিত দেখে ক্রমাগত দাম বাড়তে থাকে।
দুপুরে ২টা পর্যন্ত আয়োজক কমিটি অতিরিক্ত মূল্যে ধারণ ক্ষমতার ৬ গুণ বেশি টিকিট বিক্রি করে দেয়।
দর্শকরা জানিয়েছেন, ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এক একটি টিকিট। স্টেডিয়ামটির ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার হলেও ৩০ হাজার টিকেট বিক্রি করা হয়। অতিরিক্ত দর্শকরা গ্যালারিতে বসার স্থান না পেয়ে গেট ভেঙে আড়াইটার দিকে পুরো মাঠ দখল করে নেন। এ কারণে মাঠে খেলা পরিচালনার সুযোগ না হওয়ায় আয়োজকসহ পুলিশ, র্যাব ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশে ব্যর্থ দর্শকরা স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে ভবনে ভাঙচুর শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে দর্শকদের বের করে দিতে সক্ষম হয়। এরপর মাঠে খেলা পরিচালনার প্রস্তুতি নিলেও গ্যালারির দর্শক ও বাইরের দর্শকরা একযোগে হামলা করে গ্যালোরি, মাঠ, প্রেস বক্সসহ সব কিছুতে ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১৫ জনকে চিকিৎসার তথ্য নিশ্চিত করেছেন জরুরি বিভাগে দায়িত্বশীল চিকিৎসক।
ফাইনাল খেলা স্থগিত করলেও আয়োজক কমিটি, জেলা প্রশাসকসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা) স্টেডিয়ামের একাংশে আগুন জ্বালিয়ে দিতে দেখা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।