
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে পছন্দের দেশ হিসেবে প্রথম স্থানেই থাকে যুক্তরাষ্ট্র। অনেক শিক্ষার্থীই চার বছর পর্যন্ত চলা কোর্সের সময় পরিবারকে সঙ্গে রাখতে চান।
তবে, শিক্ষাজীবন চলাকালীন শিক্ষার্থীরা কি তাদের পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে নিতে পারেন? উত্তরটি হচ্ছে হ্যাঁ, পারেন। তবে এজন্য শিক্ষার্থীদের কিছু শর্ত মানতে হয়। এ ছাড়া, মার্কিন ভিসা আইনে নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতাও আছে।
যদি শিক্ষার্থী হিসেবে কারও এফ-১ ভিসা থাকে তবে, তার স্ত্রী বা স্বামী এবং ২১ বছরের নিচের অবিবাহত কন্যা বা পুত্র যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন। কিন্তু, এর জন্য তাদেরকে কনস্যুলার বা ইমিগ্রেশন অফিসারদের কাছে প্রমাণ জমা দিতে হয়। অর্থাৎ, স্বামী বা স্ত্রীকে নেওয়ার ক্ষেত্রে বৈবাহিক সনদ এবং সন্তানের ক্ষেত্রে জন্ম সনদ দেখাতে হবে, যেন তারা আপনার বৈধ নির্ভরশীল হিসেবে প্রমাণিত হয়।
শিক্ষার্থীদের যেখানে এফ-১ ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়, সেখানে তার স্ত্রী বা স্বামী এবং ২১ বছরের নিচের অবিবাহিত সন্তানরা এফ-২ ভিসা স্ট্যাটাস নিয়ে দেশে প্রবেশের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
শিক্ষার্থীর ওপর নির্ভরশীল পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে নিতে চাইলে অবশ্যই আগে শিক্ষার্থীর ডেজিগনেটেড স্কুল অফিসিয়াল (ডিএসও)–কে জানাতে হবে যে তিনি পরিবারকে সঙ্গে নিতে চান। তারপর তারা প্রত্যেক নির্ভরশীল সদস্যের জন্য আলাদা ফর্ম আই-২০ ইস্যু করবে।
এ ছাড়া, এফ-২ ভিসার যোগ্যতা প্রমাণের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণও দেখাতে হয়। এক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর জন্য কমপক্ষে ১৪ হাজার ২৫৩ ডলার এবং প্রতিটি সন্তানের জন্য কমপক্ষে ৭ হাজার ১২৭ ডলার দেখাতে হবে।
এই এফ-২ ভিসার আবার কিছু উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন, এই ভিসাধারীরা যুক্তরাষ্ট্রে কাজের অনুমতি পান না। তবে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চবিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন পড়াশোনার সুযোগ রাখা হয়েছে তাদের জন্য। এছাড়া, পরবর্তীতে এফ-২ ভিসাধারীরা এফ-১ ভিসায় পরিবর্তন করতে পারেন।
এফ-২ ভিসাধারীদের প্রধান সীমাবদ্ধতা হলো আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জন। এফ-১ শিক্ষার্থীদের অবশ্যই প্রমাণ দেখাতে হয় যে তাদের কাছে যথেষ্ট তহবিল আছে যাতে তারা শুধু নিজের খরচ নয়, বরং স্ত্রী বা স্বামী ও অবিবাহিত সন্তানদের খরচও বহন করতে পারেন। এ কারণে তাদের ব্যাংকে উচ্চ তহবিলের প্রমাণ দেখাতে হয়।
এফ-২ নির্ভরশীলরা কোনো পূর্ণকালীন চাকরি করতে পারেন না। এই সীমিত স্বাধীনতা পরিবারে আয় ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্য বীমা এবং শিশু পরিচর্যার খরচও অত্যন্ত বেশি এবং বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত নির্ভরশীলদের জন্য কোনো সাবসিডি দেয় না। এছাড়া, এফ-১ শিক্ষার্থীর কোনো নিয়মভঙ্গ বা অসদাচরণ সামনে আসে, তবে তার ওপর নির্ভরশীল এফ-২ ভিসাধারীর বৈধতা নিয়েও ঝুঁকি তৈরি হয়।
এফ-২ নির্ভরশীলরা তাদের বৈধ ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস বজায় রাখতে পারেন, যতক্ষণ মূল এফ-১ শিক্ষার্থী তাদের স্ট্যাটাস ধরে রাখেন। এতে শিক্ষার্থীর পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর অনুমোদিত অপশনাল প্র্যাক্টিক্যাল ট্রেইনিং (ওপিটি) সময়কালও অন্তর্ভুক্ত। এফ-২ নির্ভরশীলদের সাধারণত এফ-১ শিক্ষার্থীর স্ট্যাটাসের মেয়াদ অনুযায়ী একইসঙ্গে অনুমোদন দেওয়া হয়।