দেখতে একরকম মনে হলেও টোফু এবং পনির কিন্তু এক নয়। দুটি খাবারই দুধ থেকে তৈরি। তবে একটি উদ্ভিজ উৎস থেকে অন্যটি প্রাণিজ উৎস থেকে। সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতে কোনটি খাওয়া বেশি ভালো আসুন জেনে নিই আজকের আয়োজনে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুষ্টিগুণ ও ভিটামিনে ভরপুর টোফু ও পনির দুটোই। তবে ব্যক্তিভেদে প্রয়োজন অনুযায়ী, ডায়েট লিস্টে প্রাধান্য দিতে হবে এ দুটি খাবারকে।
টোফু
টোফু তৈরি হয় সয়া মিল্ক থেকে। এটি প্রোটিনের বিশাল ভান্ডার। ক্যালশিয়াম ও আয়রনও প্রচুর পরিমাণে রয়েছে টোফুতে।
পনির
অন্যদিকে পনির তৈরি হয় গরু, মহিষ, ছাগলের মতো প্রাণির দুধ থেকে। টোফুর মতোই পনিরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম ও আয়রন। সুস্থ, সবল ও শরীরের হাড়ের যত্নে পনির নিয়মিত ডায়েট লিস্টে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রোটিন কোনটিতে বেশি?
পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১০০ গ্রাম পনিরে প্রোটিন থাকে গড়ে প্রায় ১৮-২১ গ্রাম। অন্যদিকে ১০০ গ্রাম টফুতে প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় ৮-১০ গ্রাম।
কোনটি বেশি ভালো বা উপকারী?
কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরী এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পনির এবং টোফু দুইই অত্যন্ত উপকারী। দুই খাবারেরই অনন্য কিছু গুণ রয়েছে। তাই নীরোগ জীবন কাটাতে দুই খাবারই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ডায়েট লিস্টে রাখলে উপকার মিলবে হাতেনাতে।
কোয়েল পাল চৌধুরী আরও বলেন, সকালে দ্রুত শরীরের পুষ্টিগুণ পূরণে নিয়মিত টোফু বা পনির খাওয়া ভালো। তবে এ দুই খাবারের পুরো পুষ্টি উপকারিতা পেতে হলে অল্প তেল-মশলায় খাবার রান্না করতে হবে। তবে ব্যক্তি ও প্রয়োজন ভেদে টোফু ও পনিরের মধ্যে পার্থক্য টানা যেতে পারে বলে মনে করেন এ পুষ্টিবিদ। যেমন-
১। ওজন কমাতে চাইলে টোফুকে বেছে নিতে হবে। কারণ পনিরের তুলনায় টোফুর ক্যালোরি ভ্যালু কম।
২। পেশি শক্তি বাড়াতে চাইলে পনির বেছে নিতে হবে।
৩। যারা তরল দুধ খেলে হজম করতে পারেন না সহজে তারা টোফুকে বেছে নেবেন। কারণ প্রাণির দুধে ল্যাকটোজ উপাদান থাকে। যা অনেকের পেটে হজমের সমস্যা তৈরি করে। এ সমস্যা এড়াতে টোফুই নিয়মিত প্রাধান্য দিন। কারণ টোফুতে ল্যাকটোজ উপাদান নেই।
৪। হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে পনিরের পরিবর্তে টোফুই নিরাপদ। কারণ পনিরে প্রোটিন বেশি, উচ্চ মাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ক্যালোরিও বেশি টোফুর তুলনায়। তাই কোলেস্টেরলমুক্ত থাকতে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে টোফু বেশি নিরাপদ।
৫। পনিরে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি১২ বেশি, যা হাড় ও স্নায়ুর পক্ষে উপকারী। অন্য দিকে, টফুতে থাকে আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম, যেগুলি রক্ত তৈরি ও পেশির কাজে লাগে। তাই স্বাস্থ্যগত চাহিদার উপরে নির্ভর করে ডায়েটলিস্টে যোগ করতে হবে দুই খাবারকে।