চলতি বছরের জুলাই মাসেই তৈরি হবে ‘জুলাই সনদ’। এমন লক্ষ্য নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলতি মাসে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শুরু করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। যেখানে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
চব্বিশের উত্তাল জুলাইয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই দাবি ওঠে পুরো কাঠামোর আমূল সংস্কারের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিত মতামত নেয়ার পর গত ২০ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ৩০টির বেশি দলের সঙ্গে বসেছেন কমিশনের সদস্যরা। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বেশকিছু দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে একাধিক দিন।
পাঁচ সংস্কার কমিশন নিয়ে আলোচনা চললেও সংবিধান নিয়েই হচ্ছে দীর্ঘ যুক্তিতর্ক। এর মধ্যে, সংবিধানের মূলনীতি, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য এবং মেয়াদ, এক ব্যক্তির একাধিক দায়িত্ব পালন, গণপরিষদ নির্বাচন ও সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের মতো বিষয়গুলোতে রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থান। এরমধ্যে সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া নিয়েও রয়েছে নানা মত।
অন্যদিকে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, নারী আসন বৃদ্ধির বিষয়গুলোতে নীতিগতভাবে দলগুলো একমত হলেও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত।
জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতায় আশা দেখছেন কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আলোচনার মধ্য দিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই পূর্বের অবস্থান থেকে সরে আসছে দলগুলো। ভিন্নমতের বিষয় নিয়ে মে মাসের শেষ নাগাদ শুরু হবে দ্বিতীয় দফার আলোচনা।’
অনেক রাজনৈতিক দল সংস্কার কার্যক্রমের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেও আলী রীয়াজ বললেন, বিচার বিভাগসহ বেশকিছু জায়গায় এরইমধ্যে প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। জুলাই মাসেই ‘জুলাই সনদ’ করার পরিকল্পনা ঐকমত্য কমিশনের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ‘আধিপত্য নষ্ট হয়, এমন সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলো চায় না। ফলে ঐকমত্য তৈরিতে বেগ পেতে হচ্ছে কমিশনকে। সব দলকে দেশের স্বার্থে মৌলিক বিষয়ে একমত হতে হবে।’ সময়।