News update
  • IAEA Chief Calls for Renewed Commitment to Non-Proliferation     |     
  • UN Aid Chief Warns Humanitarian Work Faces Collapse     |     
  • Arab-Islamic Summit yields limited action over Israeli strike on Doha     |     
  • National Consensus Commission term extended till October 15     |     
  • EU Helping BD prepare for free, fair elections: Envoy Miller     |     

শিক্ষার হার বাড়াতে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2023-02-08, 3:13pm

image-78091-1675845500-237193c44de88819b76495cb06df92a01675847621.jpg




প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার হার বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি আজ সকালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের সময় এ আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার হার বর্তমানে ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ থেকে আরও বাড়াতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী  আজ সকালে তাঁর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে কম্পিউটারের বোতাম চেপে ২০২২ সালের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসহ ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন।

এ সময় তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর আমরা শিক্ষার হার ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করলেও বিগত বিএনপি সরকারের সময় এ হার কমে ৪৪ শতাংশে নেমে আসে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে, আমরা (গত) বিএনপি সরকারের আমলের শিক্ষার হারকে বাড়িয়ে ৪৪ শতাংশ থেকে ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী সময়মতো পরীক্ষা আয়োজন ও ফল প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আন্তরিক কৃতঞ্জতা জানান।

তিনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হতে এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার আহবান জানান।

সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন তাঁর ‘সোনার বাংলা গড়ার জন্য সোনার মানুষ চাই’। সেক্ষেত্রে আমাদের আজকের ছেলে-মেয়েরাইতো সোনার মানুষ।’ 

তিনি বলেন, বোর্ড পরীক্ষার পর অবসর সময়ে শিক্ষার্থীদের বুনিয়াদি ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। যাতে তারা নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারে। তাহলে তারা দেশ-বিদেশে চাকরি পেতে সুবিধা পাবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার তথ্য-প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের জন্য এবং ইনকিউবেশন সেন্টার ও ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। পরীক্ষার নিয়মিত প্রস্তুতির পাশাপাশি তারা আইসিটি বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিতে পারছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগ ডিজিটাল ডিভাইসের যুগ কাজেই সেদিকে তারা আরো নজর দিলে সেখানে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তাছাড়া আমরা প্রত্যেকটা উপজেলায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাসহ বহুমুখি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তিনি বলেন, ‘শুধু বিএ, এমএ পাশ করলে হবে না, একই সময়ে তাদের তথ্য-প্রযুক্তির ওপর জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কারণ, বর্তমান যুগটা ডিজিটাল ডিভাইসের যুগ।’

তিনি ছেলে-মেয়েদের অযথা সময় নষ্ট না করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলার আহবান জানান।

সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার প্রত্যেকটি উপজেলা পর্যায়ে একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারীকরণ করে দিয়েছে, বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ঘরের খেয়ে যেন ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষা নিতে পারে সেই সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত তাঁর সরকারের বিভিন্ন বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান, বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণসহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা প্রদানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার গবেষণার প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করেছে। যা একসময় আমাদের দেশে ছিল না। ’৯৬ সালে সরকারে এসেই প্রথম তিনি গবেষণার জন্য পৃথক বরাদ্দ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি এটা, গবেষণারই ফসল। বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও কৃষির বর্তমানে যে গবেষণা চলছে তার সঙ্গে অন্যান্য ক্ষেত্রেও তিনি গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।

এর আগে, শিক্ষামন্ত্রী সম্মিলিত ফলাফলের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। পরে একে একে ১১টি শিক্ষা বোর্ড- নয়টি সাধারণ বোর্ড, একটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা নিজ নিজ বোর্ডের ফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।

করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় গত ৬ নভেম্বর সারাদেশে স্বাভাবিক পরিবেশে শুরু হয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবং শেষ হয় ২২ ডিসেম্বর। মাত্র ৫৭ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করা হলো। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭জন। এর মধ্যে ৬লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন।

বিএনপি শাসনামলে শিক্ষায় বাংলাদেশ পিছিয়ে যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমাদের একটা প্রকল্পও ছিল নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। প্রত্যেকটা জেলা যেন নিরক্ষরতামুক্ত হয় সেজন্য কয়েকটি জেলাকে নিরক্ষরতামুক্ত ঘোষণাও করেছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০১ সালে আমরা আর সরকারে আসতে পারিনি। এর পর বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসলে সেসব প্রকল্প আর কার্যকর হয়নি।

তিনি বলেন, সরকার দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চায়। এর প্রধান হাতিয়ার শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। তাই সরকার শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তাঁর সরকার শিক্ষাকে বহুমুখীকরণ করেছে। সারা বাংলাদেশে, বিশেষকরে বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে। ফলে শিক্ষার হার ও বেড়েছে।  

সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তো সবার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা অনেক মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করে দিয়েছি। শিক্ষকদের সরকারি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি।

মাদ্রাসায় পড়ুয়াদের জন্য প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা যাতে তারা নিতে পারে। কারণ,মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরে ছেলে-মেয়েরা কোথায় গিয়ে কাজ করবে? সেজন্য তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ বা তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা-এসব কারিগরি ক্ষেত্রে যাতে তারা আরও প্রশিক্ষণ নিতে পারে সেই সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের উৎসাহিত করা দরকার। তাতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা পাস করতে পারেনি, তারা যেন মন খারাপ না করে। সামনে ভালো করার জন্য নতুন করে যেন উদ্যোগ নেয়। আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন ফেল করবে?

তিনি বলেন, আমি দেখলাম পাসের হারে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। এর মানে, ছেলেদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।

আমাদের ছেলেমেয়েরা খুব মেধাবী, একটু সুযোগ পেলে তারা অসাধ্য সাধন করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিয়ম করেছিলাম, ফলাফল ৬০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। এবার আপনারা ৬০ দিনের আগেই দিয়েছেন। তাই সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তথ্য সূত্র বাসস।