News update
  • 30 injured, bogies derailed as two trains collide in Gazipur     |     
  • 20 killed in mountain bus accident in Pakistan     |     
  • 70% of envir journalists report attacks, threats, pressure: UN     |     
  • Dhaka air ‘unhealthy’ Friday morning     |     
  • Arakan Army frees 12 Bangladeshi fishermen     |     

জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2022-05-25, 11:55pm

image-43484-1653489517-db535ac7aa9f57a62e35ce8d37813da71653501345.jpg




বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুলল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে । কর্মসূচির মধ্যে ছিল- সকালে কবির সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জাতীয় পর্যয়ে এবার কবির জন্মবার্ষিকীর মুল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় কুমিল্লায় । 

জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ হতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি'র নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ছয়টায় কবির সমাধিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুরসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাসহ বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন,কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে (টাউন হল) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ । সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর। স্মারক বক্তৃতা করেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি) এমপি, কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান এবং কবিপৌত্রী খিলখিল কাজী ও মিষ্টি কাজী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। পরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে নৃত্যনাট্যসহ ৩০ মিনিটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান বলেন, রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন নজরুল। কিন্তু নজরুলের স্বাতন্ত্র হচ্ছে তিনি মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন, নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন, সাম্য ও সম্প্রীতির কথা বলেছেন। কবিতা যে মানুষকে উদ্দীপ্ত করে, বিদ্রোহী করে- তার অনন্য উদাহরণ নজরুলের 'বিদ্রোহী' কবিতা।

সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার মাটি ও মানুষের সঙ্গে নজরুলের রয়েছে অটুট বন্ধন। ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নজরুল কুমিল্লায় এসেছেন মোট পাঁচবার। সবমিলিয়ে থেকেছেন প্রায় ১১ মাস। নজরুলের দাম্পত্য জীবনের বন্ধনও ঘটেছিল কুমিল্লায়। কুমিল্লায় দৌলতপুরে ৭৩দিন অবস্থানকালে নজরুল ১৬০টি গান ও ১২০টি কবিতা রচনা করেছেন। এখানকার রচনা নজরুলকে প্রেমিক কবি হিসেবে পাঠক দরবারে পরিচিত করেছে।
জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল, কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে নজরুল মালা, নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে স্থানীয় প্রশাসন।
বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে কবি নজরুল জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। কাজী নজরুল ইসলাম চির প্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মুলত তিনি বিদ্রোহী কিন্তু তাঁর প্রেমিক রুপটিও প্রবাদপ্রতিম। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন। তথ্য সূত্র বাসস।