News update
  • No Media Faced Arson Attacks in 53 Years: Mahfuz Anam     |     
  • Janaza of six Bangladeshi peacekeepers held at Dhaka Cantonment     |     
  • Bangladesh stock market loses Tk 10,500cr in a week     |     
  • Dhaka’s air turns ‘very unhealthy’ on Sunday morning     |     
  • Project to transform N’ganj into a climate-resilient green city     |     

'টাকা ছাড়া মামলার নথি যেন শুনানীর জন্য হাঁটছে না আদালতে'

আদালত 2025-07-27, 11:58pm

court-gravel-c98984e3fa9adfbbdcb832382e65fc4a1753639084.jpg

Court gravel



পটুয়াখালী: নালিশী মামলা দাখিল কিংবা জামিন শুনানী সহ যেকোন মামলার নথি পুট অফ' প্রেয়ার দাখিলের সাথেই বেঞ্চকে কমপক্ষে ৫০০-১০০০ টাকা হারে দিতে হচ্ছে। নতুবা মামলার নথি শুনানীর জন্য আদালতে নিচ্ছে না বেঞ্চ। ফলে বাধ্য হয়েই বিচার কার্যক্রমে অংশ নিতে বেঞ্চের দাবীকৃত ঘুষ মেটাতে বাধ্য হচ্ছে ফরিয়াদীরা।  -এমন চিত্র পটুয়াখালীর কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চৌকি আদালতের।  দীর্ঘদিন ধরে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক শূন্যতায় পটুয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে গিয়ে বিচার প্রার্থীকে মামলার কার্যক্রমে অংশ নিতে হচ্ছে। এতে নিযুক্তীয় কৌশুলী, তাঁর সহকারীর যাতায়াত ভাড়া সহ ফিস এবং নতুন করে আদালতের বেঞ্চ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষের দাবী মেটাতে বিচারপ্রার্থী মানুষ এখন নি:স্ব হওয়ার পথে। একই অবস্থা আদালতের পুলিশ শাখা সহ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতেরও। টাকা ছাড়া মামলার নথি যেন শুনানীর জন্য হাঁটছে না আদালতে, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এনিয়ে আইনজীবী সমিতি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের জানিয়েও কোন প্রতিকার মিলছেনা। গনঅভু্্যন্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আদালতের বেঞ্চ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রকাশ্যে এমন ঘুষ দাবীতে হতবিহবল হয়ে পড়েছে বিচারপ্রার্থী মানুষ।         

সূত্র জানায়, কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে নালিশী মামলা দাখিল, মামলার নথি পুট অফ, এমনকি ধার্য তারিখেও মামলার নথি প্রতি ৫০০-১০০০ টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বিচার প্রার্থী মানুষকে। নালিশী মামলার জবান বন্দি শেষে স্বাক্ষর নেয়া, আদেশ পরবর্তী সমন দাখিল, গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি, জামিন পরবর্তী বেলবন্ড দাখিল,ওযারেন্ট রিকল পেতেও আলাদা ভাবে টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়া আসামী পক্ষের মোটা অংকের তদ্বিরে মামলায় জামিন, খালাসের কন্টাক্ট নেয়া সহ মামলার ওয়ারেন্ট ধামা চাপা দেয়া, টাকা পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত মামলা বিচারে বদলী, চাঁদাবাজী, মারামারি সংক্রান্ত সিআর মামলায় বাদী পক্ষের হাজিরা সরিয়ে অর্ডার শীটে অনুপস্থিত লিখে মামলা খারিজ করে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে বেঞ্চের বিরুদ্ধে। 

কলাপাড়া চৌকি আদালতে প্রাকটিসরত আইনজীবী তাদের একাধিক সহকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে গনমাধ্যমকে জানান, বিচারক শূন্যতায় মামলার নথি নিয়ে উপজেলা থেকে পটুয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে যাওয়ার যাতায়াত খরচের নামে বেঞ্চ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন নিয়মিত ঘুষ নিচ্ছেন বিচার প্রার্থীদের কাছ থেকে। এনিয়ে এরা সিন্ডিকেট করে ফেলেছে। দু'একজন আইনজীবী নেতাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে তারা তাদের পক্ষে রাখছে।  সিন্ডিকেটে রয়েছে আদালতে কর্মরত একাধিক স্থানীয় অধিবাসী, যারা নিজ এলাকার  রয়েছেন বছরের পর বছর ধরে। এছাড়া ঘুরে ফিরে একই আদালতে কর্মরত আছেন অনেকে। কেউ কেউ আদালতের এখতিয়ারধীন এলাকায় জমি জায়গাও কিনে ফেলেছেন।                                       

সূত্রটি আরও জানায়, বিচারকের সাথে এদের রয়েছে গোপন সখ্যতা। প্রভাবশালী আসামীদের জামিন, খালাসে মোটা অংকের লেনদেন করছেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এনিয়ে বার বেঞ্চের সাথে মতানৈক্য হওয়ায় আইনজীবীদের লাগাতার আদালত বর্জন কর্মসূচী পালনের ঘটনাও ঘটেছে। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার জেলা আইনজীবী সমিতির হস্তক্ষেপে আদালত বর্জন কর্মসূচী প্রত্যাহার হলেও ঘুষ বানিজ্য প্রত্যাহার হয়নি আদালত অঙ্গন থেকে।  আগষ্ট পরবর্তী সময়ে নিম্ন আদালত থেকে 'লীগ নেতা-কর্মীদের স্বল্প হাজতবাসের পর জামিন পেতে ভূমিকা রেখেছে বেঞ্চ। এছাড়া ঘুষ লেনদেনে জামিন খালাস নিয়ে আইনজীবীদের জরুরী সভায় রেজুলেশন করা হয়েছে।  রেজুলেশনে কলাপাড়া সিনিয়র  জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চৌকি আদালতের জিআর-২২১/২০১৮, জিআর-৫০/২০২২, জিআর-২৮৭/২০২৭, জিআর-৯৭/২০১৯, জিআর-২৫২/২০২৮, জিআর-৪৪১/২০১৯, জিআর-২৪৮/২০১৮, সিআর-১৪৭/২০১৪, জিআর-৪২৪/২০২৯, সিআর-১২২৮/২০২৩, জিআর-৯৮/২০২৪ মামলা সহ বেশ কিছু মামলার তথ্য উঠে এসেছে। 

উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বিচার প্রার্থী আফজাল মুন্সী বলেন, 'আমি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ায় মামলার তারিখ কোর্টে আসতে পারি নাই। এতে আমার নামে ওয়ারেন্ট হয়। পুন:রায় পটুয়াখালী গিয়ে আমাকে জামিন নিতে হয়েছে। জমিন নিতে উকিল, মহুরী, পেশকার, পিয়নকে টাকা দিয়ে আমার অবস্থা বারোটা।' - গোফরান পলাশ