News update
  • Five Shariah Banks to Merge Into State-run Sammilito Islami Bank     |     
  • Dhaka’s air ‘unhealthy for sensitive groups’ Wednesday morning     |     
  • US proposes that the UN authorize a Gaza stabilization force for 2 years     |     
  • Democrat Zohran Mamdani is elected New York City mayor     |     
  • Martyr Mugdha's brother Snigdha steps into politics with BNP     |     

সাদা মানিককে বিদায় দিতে শত মানুষের ভিড়

Words of faith 2022-07-04, 12:08pm

Sacrificial animal



ঝিনাইদহ প্রতিনিধি- গ্রামের শত শত মানুষ সাদা মানি-কে বিদায় জানাতে রাস্তার দু-ধারে দাড়িয়ে আছে। এ-যেন এলাকার সু-পরিচিত বিক্ষাত কোন ব্যাক্তিকে গ্রাম থেকে বিদায় জানানো হচ্ছে। এসময় গ্রামের ছোটবড় নারী পুরুষের চাহুনি শুধুই সাদা

মানিকের দিকে। সাদা মানিকও হেলেদুলে গ্রামের মেঠ পথ ধরে এদিক ওদিক তাকিয়ে এগিয়ে চলেছে। বলছিলাম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের দিনমজুর ময়নদ্দিন মন্ডলের শখের পোষা গরু সাদা মানিকের কথা।

গ্রামের কৃষি দিনমজুরের টিনের চালার ঘরে বেড়ে উঠেছে সাদা মানিক। দেখতে মাথার দুইপাশে কালো এবং পুরো শারীর ধবধবে সাদা, খাড়া দুটি শিং, একটু দুষ্ট স্বভাবে ও প্রভুভক্ত। একারনে আদর করে নাম রাখা হয়েছে সাদা মানিক। এক বছর

আগে, নিজের পোষা গুরু বিক্রয় করে, পাশের গ্রাম থেকে ফ্রিজিয়ান জাতের এই ঘাঁড় গরুটি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় কেনেন সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের কৃষি দিনমজুর ময়নদ্দিন মন্ডল।

তিন বছরে সাদা মানিকের হয়েছে বিশালাকারের একটি দেহ। দৈর্ঘ্যে ১১ ফুট, ৬ফুট উচ্চতা এবং গোলাকার ৯ফুট সাদা মানিকের ওজন প্রায় ৩২-৩৩ মন। দিনমজুর ময়নদ্দিন এই গরুটির দাম হাঁকাচ্ছেন সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা।

সরোজমিনে দেখা যায়, গ্রামের মেঠপথ ধরে হেলেদুলে সাদা মানিক ঢাকার উদ্দেশ্যে অপেক্ষামান ট্রাকের দিকে আসছে। সে সময় তাকে দেখতে গ্রামের শত শত মানুষ রাস্তার দুই ধারে ভিড় করে দাড়িয়ে আছে। তাকে যে সবথেকে বেশি দেখাশোনা করত ময়নদ্দিনের স্ত্রী আনজিরা খাতুন তিনিও বিদায় জানাতে ১কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তার সাথে এসেছেন। সাদা  মানিকে ঢাকার গাভতলি বাজারে বিক্রয় করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

পাশের গ্রামের জামাল বিশ^াস জানান, তাদের পাশের গ্রামের ময়নদ্দিন গরিব মানুষ, সে দিনমজুর কৃষি কাজ করে। শখ করে একটি গরু পালন করেছে। তার গরুর মত এমন গরু আশে পাশের কোন গ্রামে আর নেই। তার যে গরু সেই হিসেবে

লোকাল বাজারে তার গরুর দাম পাচ্ছে না। যার কারনে সে তার গরুটাকে ঢাকায় বিক্রয়ের জন্য নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে তার গরুটি নেয্য মূল্যে বিক্রয় করতে পারে।

প্রতিবেশি আলমগীর জানান, গরুর মালিক গরীব মানুষ হওয়ায় পরের ক্ষেতে খামারে কাজকর্ম করে। তিনি শখের কারনে এমন একটি গরু পালন করেছে। সারাদিন মাঠে কাজকাম করার পর, মাঠ থেকেই কাঁচা ঘাস কেটে বাড়িতে নিয়ে যায়। তার গোয়ালে যে এত বড় গরু আছে এটা আসলেই অবাক করার বিষয়। গ্রামে তার গরুর যে দাম হচ্ছে সেটা অনেক কম। যার কারনে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছে। সে যেন নেয্য মূল্য পায়।

ময়নদ্দিনের স্ত্রী আনজিরা খাতুন জানান, তিনি একবছর ধরে এই গরুটা লালন পালন করছে। তার গায়ে কখনো ময়লা হতে দেয়নি। দিনে তিন বার গোসল করা হত। তাকে শুধু মাঠের কাঁচা ঘাম, বাড়িতে উৎপাদিত গম, ছোলা ও ধান খায়াতো। গরীব

হওয়ায় ভালো কোন খাদ্য খাবার খাওয়াতে পারেনি। এখন এই গরুটি বিক্রয় করে নিজেদের সংসারের খরচ এবং আরো দুইটা গরু ক্রয়ের আশা তার। তাকে বিদায়  দিতেও অনেক কষ্ট হচ্ছে। তারপরও তাকে বিক্রয় করতে হবে।

দিনমজুর ময়নদ্দিন বলেন, এক বছর আগে নিজের বাড়িতে পোষা একটি ষাড় ২লক্ষ ২০ হাজার টাকায় বিক্রয় করি এবং দুইটা ছাগল বিক্রয় করে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় গরুটি পাশের গ্রাম থেকে ক্রয় করি। তখন গরুটির বয়স ছিল দুই বছর এবং ওজন ছিল ১০মন। বাড়িতে নিয়ে আসার পর প্রাকৃতিক উপায়েই তাকে খাওয়ানো হত।

তার খাবারের তালিকায় ছিল ছোলা, গম, ভুট্টা, ধান এবং কাঁচা ঘাস। গরীব মানুষ হওয়ায় বাজারের দামি কোন খাবার খাওয়াতে পারেনি। কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করতে কোন ঔষধও খায়ানো হয়নি।

আরো বলেন, এখন বর্তমান বাজারে এই গরুর মূল্য প্রায় ১০ থেকে ১১ লক্ষ টাকা কিন্তু লোকাল বাজারে এর দাম হচ্ছে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা। যার কারনে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঢাকার গাভতলি একটি বড় হাটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে

সেখানে সাদা মানিকের নেয্য মূল্য পাবো।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মনোজিৎ কুমার সরকার বলেন, এ বছর জেলার ৬ উপজেলায় কোরবানির জন্য ৮৬ হাজার গরু ও ১ লাখ ৯ হাজার ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন

স্থানে। এদিকে পশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার বন্ধে খামারগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।