বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং ফারুক আহমেদের বিসিবি পরিচালক মনোননয়ন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এই মনোনয়ন বাতিল মানে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন ফারুক। অর্থাৎ বিসিবি সভাপতি পদই হারিয়েছেন সাবেক এই ক্রিকেটার।
গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর এনএসসির মনোনীত কাউন্সিলর হিসেবে বিসিবি পরিচালক হয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। সেখান থেকে বিসিবির বোর্ড মিটিংয়ে নির্বাচিত হন সভাপতি। নিয়মানুযায়ী, বিসিবির সভাপতি হতে হলে অবশ্যই তাকে পরিচালক হতে হবে। বিভিন্ন অভিযোগের কারণে এবার ফারুকের সেই পরিচালক মনোননয়ন বাতিল করেছে ক্রীড়া পরিষদ। তাই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আর সভাপতি পদ থাকছে না ফারুকের।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক বিবৃতিতে ফারুকের পরিচালক মনোনয়ন বাতিলের ঘোষণা দেয় এনএসসি। সেখানে জানানো হয়, ক্রিকেট বোর্ডের ৮ জন পরিচালকের অনাস্থা প্রস্তাব এবং বিপিএল সংক্রান্ত সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় বিসিবির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার রদবদলের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পছন্দের প্রার্থী হিসেবেই বিসিবির সভাপতি পদে এসেছিলেন ফারুক আহমেদ। তবে ৯ মাস যেতে না যেতেই বুধবার (২৮ মে) রাতে বিসিবি সভাপতি ফারুককে ডেকে নিয়ে তাকে এই পদে আর রাখতে না চাওয়ার বিষয়টি জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য উপদেষ্টার কাছে ১ থেকে ২ দিন সময় চেয়ে নেন বিসিবি সভাপতি।
তবে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে বিসিবি সভাপতি জানান, বোর্ড সভাপতি থেকে তাকে অপসারণের কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। তাই এই পদ থেকে সরবেন না।
এমন ঘোষণার দিনে অবশ্য দুটি বড় বড় ধাক্কা খেয়েছেন ফারুক। এবারের বিপিএলে অনিয়মের সত্যানুসন্ধানে যে কমিটি করা হয়েছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে, সেই কমিটি তদন্তে বিসিবি সচাপতিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। একই দিনে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছেন ৮ পরিচালক।
বিসিবি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রতিষ্ঠানের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সরকারের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ। তাই বিসিবি সভাপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে আইসিসির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞাও আসতে পারে। তবে এবার পরিচালক পদে ফারুকের মনোনয়ন সভাপতি পদে তার গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করেছে। তাই ক্রিকেটাঙ্গনে যে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।