
investigation has started against Kalapara Health officer
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জুনায়েদ হোসেন খান লেলিনের দুর্নীতি, অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে তদন্ত কমিটি। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার হাতে প্রায় তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ক্যাম্পাসের এ ঘটনায় তোলপাড়া শুরু হয়।
সূত্র জানায়, শতাধিক ছাত্র জনতা এসময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। এনসিপি নেতা আল ইমরান সহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা শাফি কামাল, মোস্তাফিজুর রহমান ও একাধিক ভুক্তভোগী ডা. লেলিনের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে কলাপাড়া থেকে অপসারণের দাবিতে ২০২৫ সালের ১৪ মে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এর প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিনে কলাপাড়া হাসপাতালে তদন্তে আসেন। এই খবরে ভুক্তভোগীসহ ছাত্র নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে ডা. লেলিনকে অবরুদ্ধ করেন। তারা ডা. লেলিনকে বিগত স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে উল্লেখ করে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
কলাপাড়া থানার এসআই মো. মোফাজ্জেল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাকে আটকের সুযোগ নাই।
অভিযোগকারী আল ইমরান জানান, ডা. জুনায়েদ হোসেন লেলিন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কলাপাড়ায় চাকরি করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি আর অনিয়ম, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি একই জখমী রোগীকে দুই ধরনের সনদ দেওয়া, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু সহ একাধিক ক্লিনিক ও হাসপাতাল গড়ে তোলার অভিযোগ সংবলিত লিখিত আবেদন করার প্রেক্ষিতে তাকে পহেলা জুলাই কলাপাড়া থেকে নাটোরের পাহারতলীতে বদলী করা হয়। কিন্তু সেখান থেকে সে ছুটির দিন ছাড়াও কলাপাড়ায় এসে চিকিৎসা বাণিজ্য করছেন।
ইমরান জানান, সারা দেশে যখন ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে তখন (৪ আগস্ট-২০২৪) তার ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়েছেন ( দে দে মরণ কামড় দে আর দেরী করিসনা। অস্তিত্বে বাংলাদেশ শেখ হাসিনা)। হাসিনার পতনের পরে এই ফ্যাসিস্ট দোসরকে পদোন্নতি দিয়ে কলাপাড়ায় পদায়ন করা হয়। এরপর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা ভুক্তভোগী মানুষকে নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করতে থাকেন। শহরজুড়ে পোস্টারিং করা হয়।
ইমরান আরও বলেন, ‘ আমরা এই দুর্নীতিবাজ চিকিৎসকের জুলাই বিপ্লব নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট, স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন, ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের কপি, দুর্নীতি ও মামলার কপি, সরকারি জমি দখল ও বিক্রির ডকুমেন্ট্স, উল্লেখযোগ্য মামলার পিবিআইর প্রতিবেদন, মেডিকেল সনদের দুর্নীতির কপি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেওয়া স্মারকলিপির অনুলিপিসহ অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা, অবৈধ সম্পদের একটি বিবরণীসহ ৬৬ পৃষ্ঠা সংবলিত একটি অভিযোগ দেই। যার প্রেক্ষিতে এই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। আজ সকালে এই কমিটির প্রধান পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নীল রতন সরকার ও সদস্য আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার সরেজিমেন তদন্তের জন্য কলাপাড়ায় আসেন।
তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি হিসেবে ডা. চিন্ময় হাওলাদার জানান, তারা অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত চিকিৎসকের উপস্থিতিতে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করেছেন।
এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. জেএইচ খান লেলিন বলেন, এটি তার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। - গোফরান পলাশ