সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে আরও বেড়েছে শাক-সবজির দাম। বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার ওপরে, আর প্রতিকেজি কাঁচা মরিচের জন্য গুণতে হচ্ছে ৩০০ টাকার বেশি। অন্যদিকে দাম বেড়েছে মুরগি, ইলিশ ও অন্যান্য মাছের।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ আশেপাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বৃষ্টির অজুহাতে ফের চড়া রাজধানীর সবজির বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজি দাম। বিক্রেতারা বলছেন, পূজার ছুটি ও বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, পূজার ছুটি ও গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাজারে দেশীয় সবজির সরবরাহও কিছুটা কম। সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ১৫-২৫ টাকা করে বেড়েছে।
আরেক বিক্রেতা শাহবুদ্দিন বলেন, বাড়তি দামের কারণে সবজি কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে ক্রেতারা। এতে বেচাবিক্রি অনেক কমে গেছে। ফলে দাম বেশি পেলেও লাভ হচ্ছে কম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন ১৫০-২০০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, শিম ২০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা ও করলো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও পেঁপে ৪০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।
এদিকে দাম বেড়ে তিনশ টাকা ছাড়িয়েছে কাঁচা মরিচের বাজার। যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা নিচে। বিক্রেতারা বলছেন, খুচরা বাজারে এখন এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৩২০ টাকার আশপাশে।
মরিচ বিক্রেতা নূর ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে দেশে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে অনেক জায়গায় তলিয়ে গেছে মরিচের ক্ষেত। পাশাপাশি পূজার ছুটির কারণে মরিচ আমদানিও বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে বাজারে মরিচের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে।
ক্রেতারা বলছেন, আবারও লাগামছাড়া হচ্ছে সবজির দাম। চাপ বাড়ছে ভোক্তার। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে আসা হাসিবুল তুষ্ট বলেন, বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম কেজিতে ৩০ টাকার মতো বেড়ে গেছে। নতুন করে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। মরিচ গত সপ্তাহের চেয়ে অন্তত কেজিতে ১৫০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এই অবস্থায় চাপ বাড়ছে মধ্যবিত্তের পকেটে।
আরেক ক্রেতা বাচ্চু বলেন, বাজার লাগাম ছাড়া হয়ে উঠেছে। সবজিতে হাতই দেয়া যাচ্ছে না। এটি নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জন্য চাপ তৈরি করছে। বাজারের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে; না হলে ভোক্তার কষ্ট আরও বাড়বে।
বাজারে বেড়েছে মুরগির দামও। কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। আর প্রতিকেজি সোনালি মুরগির জন্য গুনতে হজেবঝ ৩০০-৩২০ টাকা।
তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৬০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২৪০০-২৫০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকা ও ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-১৬০০ টাকায়।
অন্যান্য মাছের দাম রয়েছে আগের মতোই চড়া। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০ টাকা, কোরাল ৮০০-৮৫০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩০০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ টাকা, পাঙাশ ২০০ টাকা এবং পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চাষের ট্যাংরা ৭৫০-৮০০, কাঁচকি ৬৫০-৭০০ এবং মলা ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে কোনো বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। কারওয়ানবাজারের চাল ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, ‘নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৮য-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯২ টাকা ও মোটা চাল ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’