News update
  • US Issues Travel Alert for Bangladesh Ahead of Election     |     
  • Air ambulance carrying bullet-hit Hadi flies for Singapore     |     
  • Can Dhaka’s arms recovery drive ensure peaceful polls?     |     
  • ‘Unhealthy’ air quality recorded in Dhaka Monday morning     |     
  • BD peacekeepers' deaths: UN chief calls Dr. Yunus, offers condolence     |     

পাহাড়ে ৩ বাচ্চাসহ ঘুরছে ভালুক, বনে সতর্কতা জারি

বন্যপ্রানী 2025-04-29, 12:10pm

rtrwtewrwe-fa14f65dc4b649280fa57a44f86046bd1745907028.jpg

মাধবপুরের তেলমাছড়া ও সালটিলার বনে বিচরণ করা ভালুক। ছবি: সংগৃহীত



হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে এশিয়াটিক কালো প্রজাতির বিলুপ্ত ভালুকের দেখা মিলেছে। স্থানীয় এক ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় ধরা পড়ে প্রাণীটি। এ নিয়ে উদ্যানের ভেতরে জনসাধারণের অবাধ চলাফেরায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের পার্শ্ববর্তী তেলমাছড়া ও সালটিলা পাহাড়ে ৩টি বাচ্চাসহ ভালুক ঘুরাফেরা করছে এমন খবরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাধবপুরে তেলমাছড়া বনটি প্রায় ১৭০০ একরের একটি বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম। সম্প্রতি তেলমাছড়া ও সালটিলা পাহাড়ে একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ভালুকটি ভয়ে একটি ইউক্লিপটর গাছে আশ্রয় নিলে সেই গাছে ভালুকের পায়ের আচরের চিহ্ন দৃষ্টিগোচর হয় সবার। স্থানীয় পাহাড়িরা ওই বনে লাকড়ি বা কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক ভালুকের চলাফেরা প্রত্যক্ষ করেছেন। ভালুকের সঙ্গে বাচ্চা থাকলে এরা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে সেজন্য স্থানীয় বন বিভাগ ওইসব পাহাড়ে সাধারণ মানুষকে নির্বিঘ্নে প্রবেশে সতর্কতা জারি করেছে। এ ছাড়া বনবিভাগ জোরদার করেছে তাদের টহল কার্যক্রম।

এ বিষয়ে তেলমাছড়া বনের বনরক্ষক সাদেকুর রহমান বলেন, বাচ্চাসহ ভালুক তেলমাছড়া ও সালটিলায় বিচরণ করছে। আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। কখনও কখনও ভালুক সাতছড়িতেও ফেরত যাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে তেলমাছড়ার বিট কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, অনেক পাহাড়ি লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে বাচ্চাসহ ভালুকটিকে দেখেছেন। আমরা টুরিস্টদের পাহাড়ে প্রবেশ করতে সাবধানতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের টহল কার্যক্রমকেও জোরদার করেছি।

হবিগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী বন্যপ্রাণী সংগঠন পাখি প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ইদানিং ওইসব এলাকায় ভালুকসহ বন্যপ্রাণীদের পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ভালুকের নিরাপত্তা ও বন জঙ্গলের পরিবেশকে সুনিশ্চিত করতে আমাদের বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা রেজওয়ান হাসানসহ বন বিভাগের জোরালো পদক্ষেপ কামনা করছি।

বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, উপমহাদেশে ভালুকের ৪ প্রজাতি ছিল। এরমধ্যে ৩টি প্রজাতি বাংলাদেশে পাওয়া যেত। তবে একটি প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ভালুকের যে দুটি প্রজাতির দেখা মেলে, সে দুটিই মহাবিপন্ন। এশিয়ান কালো ভালুক এর মধ্যে একটি।

তিনি বলেন, এই ভালুকের বুকে ইংরেজি ‘ভি’ বর্ণের মতো সাদা দাগ থাকে যা দেখতে অনেকটা অর্ধেক চাঁদের আকৃতির মতো লাগে। এ কারণে ভালুকটি চাঁদ ভালুক নামেও পরিচিত। ভালুকের এই প্রজাতিটি মাংসভুক গোত্রের হলেও কীটপতঙ্গ, ফলমূল ও মধু খায়। মা ও শাবক ছাড়া বাকি সব ভালুকই একা চলাফেরা করে। খাবারের খোঁজে দিনরাত সমানভাবে বনময় ঘুরে বেড়ায়। গাছে চড়ার ব্যাপারেও এরা ওস্তাদ। এ ভালুক সাধারণত মানুষকে আক্রমণ করে না। তবে দুই পায়ে দাঁড়িয়ে শিকারি বা শত্রুকে অনেক সময় ভয় দেখায়।

মাধবপুরের তেলমাছড়ার বনে এশিয়াটিক কালো ভালুকের উপস্থিতিকে সুখবর বলে বর্ণনা করেন জোহরা মিলা। তিনি বলেন, একসময় দেশের পার্বত্য অঞ্চল বিশেষ করে সিলেট-চট্টগ্রামের মিশ্র চিরসবুজ পাহাড়ি বনের গহিন অরণ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভালুকের বাস ছিল। কিন্তু বাসস্থান ধ্বংস, খাদ্যের অভাব, বনে অনুপ্রবেশ ও শিকার এবং পাচারের কারণে প্রাণীটি বিলুপ্ত হতে বসেছে। যদিও গহিন বনে কিছু ভালুক এখনও টিকে আছে। তবে সেটিও অস্তিত্বের সঙ্গে লড়াই করছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এটি শিকার, হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।আরটিভি