News update
  • Air ambulance carrying bullet-hit Hadi flies for Singapore     |     
  • Can Dhaka’s arms recovery drive ensure peaceful polls?     |     
  • ‘Unhealthy’ air quality recorded in Dhaka Monday morning     |     
  • BD peacekeepers' deaths: UN chief calls Dr. Yunus, offers condolence     |     
  • Bangladesh Plans Rockets, Satellites, and Space Industrial Park     |     

৪২ ফুট খুঁড়েও খোঁজ মেলেনি শিশু সাজিদের

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2025-12-11, 5:20pm

raajshaahii_0-82366fe6466bb39e3b311bb47dbd6ee81765452053.jpg




রাজশাহীর তানোর উপজেলায় পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে রাত পেরিয়ে সকাল, সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে ৪২ ফিট খুঁড়েও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাকে উদ্ধার করতে যতটুকু খোঁড়া দরকার, খোঁড়া হবে বলে জানয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা। 

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হলেও উদ্ধার করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। স্থানীয়রাও কাটিয়েছেন নির্ঘুম রাত।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুজ্জামান বলেন, উদ্ধারকাজ শেষ হয়নি। খনন চলছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় প্রাশাসন ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহায়তা করছে। ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট অবিরাম উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাজিদ ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের যে গর্তে পড়ে গেছে, তার পাশে বড় গর্ত খুঁড়ে সেখান থেকে সুড়ঙ্গ পথে তার কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সেখানেও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি তার। এখনও বিভিন্ন কৌশলে চেষ্টা চলছে শিশুটিকে সেখান থেকে উদ্ধারের।

শিশুটির অবস্থান শনাক্তে সেই গর্তে ফায়ার সার্ভিস ফেলেছিল বিশেষ ক্যামেরা। কিন্তু ৩৫ ফুট যাওয়ার পর ক্যামেরা আটকে গেলেও দেখা মেলেনি সাজিদের। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা, হয়তো ৪২ ফুটের নিচেই রয়েছে শিশুটি। পুরোটা সময় অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় ফায়ার সার্ভিস।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুর্ঘটনার পর পাইপের ভেতর থেকে শিশুটির সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। তবে দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় শিশুটি এখনও বেঁচে আছে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।

তবে স্থানীয়দের ধারণা, এই এলাকা খরাপ্রবণ হওয়ায় পানির স্তর ১৩০ থেকে ১৪০ ফুট নিচে। তাই ৪০ ফুট নয়, আরও নিচে চলে গেছে সাজিদ।

এর আগে, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরপরই উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিস। সাজিদ ওই এলাকার মোহাম্মদ রাকিবের ছেলে।

এদিকে, ঢাকায় গার্মেন্টসে কর্মরত রাকিব ছেলের দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার খবরে রাতেই তানোরে যান। তখনও গ্রামবাসীর সহায়তায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছিল ফায়ার সার্ভিস।

তিনি বলেন, ছেলে গর্তে পড়ার অনেক পর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রওনা দিয়েছিলাম। এখনও আমার ছেলেকে দেখতে পেলাম না। বেঁচে আছে কি না, কিছুই জানি না। তিনি আরও বলেন, আমি কিছু বলতে পারি না, এখন আল্লাহর ওপরই ভরসা। ছেলেকে আল্লাহর জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি। তিনি যা ভালো মনে করবেন, তাই হবে।

শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার ছোট একটি সন্তান কোলে ছিল। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ ‘মা, মা’ বলে ডেকে ওঠে। তখন তিনি পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে নেই, গর্তের ভেতর থেকে ‘মা, মা’ বলে ডাকছে। গর্তটির ওপরে খড় বিছানো ছিল। ওখানে যে গর্ত ছিল, সেটা তিনিও বুঝতে পারেননি। ওই জায়গায় পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে গর্তের ভেতর পড়ে গেছে। লোকজনকে ডাকতে ডাকতেই ছেলে গর্তের নিচে চলে যায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশে খেলছিল সাজিদ। সেখানে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) অধীনে পরীক্ষামূলকভাবে একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের পর সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল। খেলার একপর্যায়ে শিশুটি ওই অরক্ষিত সেচ পাম্পের পাইপের ভেতরে পড়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।

তাদের অভিযোগ, পাম্পের মালিক তাহের ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত এই ডিপ টিউবওয়েলের পাইপটি মুখ খোলা অবস্থায় ফেলে রেখেছিলেন। কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম জানান, তারা বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনার খবর পান। দ্রুতই উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। তারা যাওয়ার আগে স্থানীয় লোকজন প্রাথমিকভাবে চেষ্টা করার কারণে কিছু মাটির ভেতরে পড়ে ছিল। এ কারণে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছেই পাইপের মাধ্যমে গর্তে অক্সিজেন দেওয়া শুরু করে। এক্স্যাভেটর ভেটর দিয়ে ৪০ ফুট খোঁড়া হলেও তার সন্ধান মেলেনি। শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তাদের ধারণা, আরও খুঁড়তে হবে। তারপরও খোঁজ না মিললে ভিন্ন ব্যবস্থা করা হবে।