রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের চূড়ান্ত প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে মঙ্গলবার এ বিষয়ে মতামত জানাবে দলগুলো। দ্রুত সময়ের মধ্যে অমীমাংসিত বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রোববার (২০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিকেলে তিনি এসব কথা জানান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রক্রিয়া এবং এক ব্যক্তি একাধিক পদে থাকতে পারবে কিনা-তা নিয়ে দিনভর আলোচনাতেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়নি। তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ মনে করেন, বাকি দিনগুলোতে সংলাপে আরও কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হবে।
এদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের নিয়োগ নিয়ে আলোচনা ছাড়াও চারটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত লিখিত প্রস্তাবনা পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।
দীর্ঘ বৈঠক শেষে বিকেল ৫টায় ড. আলী রীয়াজ বলেন, কমিশন সংশোধিত সমন্বিত প্রস্তাব করেছে, যার অধিকাংশ বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। দলগুলো দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরশু মতামত জানাবে। যাতে পরশু একমত হওয়া যায়। আগামী দুই একদিনের মধ্যে উচ্চকক্ষের বিষয়ে একটা সমাধান দিতে পারব।
কমিশনের সহ-সভাপতি আরও জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে বিএনপি, জামায়াতসহ কয়েকটি দলের লিখিত প্রস্তাবনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) যা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। চলতি মাসেই অমীমাংসিত সব বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী।
এদিকে দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানের কথা জানায় বেশ কয়েকটি দল। যেমন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এনসিপিসহ বেশকিছু দল এক ব্যক্তিকে একাধিক পদে থাকার বিষয়ে আপত্তি জানায়।
দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানালেও প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা একজন হওয়ার পক্ষে মত জানায় জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, ঐকমত্য তৈরি না হলেও প্রায় কাছাকাছি এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো।
তিনি বলেন, দলীয় প্রধানের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত রাখা উচিৎ।
সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুদক ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এখন পর্যন্ত মোট ৬০টি সংলাপ করেছে ঐকমত্য কমিশন।
এর আগে সকালে বৈঠকের শুরুতে ড. আলী রীয়াজ বলেন, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সনদ প্রস্তুত করতে কাজ করছে কমিশন। অনেক বিষয়ে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে উচ্চকক্ষের বিষয়ে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত দেয়া যাবে।
বেলা ১টায় শুরু হয় দ্বিতীয় দফার ১৫তম দিনের সংলাপ। আলোচনা হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং একাধিক পদে প্রধানমন্ত্রীর থাকা না থাকা প্রসঙ্গে। তবে, দুই বিষয়ের কোনটিতেই ঐকমত্য তৈরি হয়নি।