News update
  • Bangladesh’s Democratic Promise Hangs in the Balance     |     
  • World War III to start with simultaneous Xi, Putin invasions?      |     
  • Election delay anti-democratic, against July-August spirit      |     
  • Bodies of 3 students recovered from two rivers in Rangpur     |     
  • BRICS Summit Opens Amid Tensions, Trump Tariff Fears     |     

৭ জুলাই: বাংলা ব্লকেডে স্থবির ঢাকা, কোটা বাতিলে ১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2025-07-07, 7:42am

img_20250707_073938-99c5ece7d6443432f462ac489f89e72b1751852525.jpg




সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে ২০২৪ সালের ৭ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচির কারণে স্থবির হয়ে পড়ে ঢাকা শহর।

এদিন রাজধানী ঢাকা ছাড়াও রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, খুলনা, রংপুর, সাভার, সিলেট, দিনাপজুর গাজীপুরসহ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাগুলো উত্তাল হয়ে উঠে। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে সারা দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরের দিন সোমবার (৮ জুলাই) এ কর্মসূচি চলবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।

৭ জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বলেন, আগামীকাল বেলা সাড়ে তিনটা থেকে ব্লকেড শুরু হবে। এর আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হবেন। কোনো আবাসিক হলে বাধা দেওয়া হলে আমাদের জানাবেন। আমরা সম্মিলিতভাবে সেই হল ঘেরাও করব।

৮ জুলাই থেকে এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, সব গ্রেডে অযৌক্তিক কোটা বাতিল করে ন্যূনতম কোটা রাখতে হবে। পাশাপাশি সংসদে আইন পাস করে কোটা সমন্বয় করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা নাতিপুতি-পৌষ্য কোটাকে অযৌক্তিক কোটা মনে করছি। দাবি মেনে নিলে আজকেই আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যাব।

আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়ে নাহিদ বলেন, দবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলবে এবং ফার্মগেট পর্যন্ত অবরোধ করা হবে। 

এদিন সন্ধ্যায় আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে আলোচনা করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আলোচনা শেষে ফিরে এসে হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, প্রধানমন্ত্রীর একদল প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করতে তাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

পূর্বঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার (৭ জুন) রাজধানী ঢাকার আটটি স্থানে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয়ভাবে শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়। এ ছাড়া সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, চানখাঁরপুল ও আগারগাঁওয়েও সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলা ব্লকেড কর্মসূচিতে অংশ নিতে বেলা আড়াইটার পর বিভিন্ন আবাসিক হল ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা সোয়া তিনটার মধ্যে গ্রন্থাগারের সামনে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শুরু হয় মিছিল-স্লোগান। পরে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিকেল চারটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় শাহবাগ মোড় দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

এদিকে বোরহান উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থীরা বিকেলে রাজধানীর চানখাঁরপুল মোড় অবরোধ করেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন ঢাকা কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন। এছাড়া আগারগাঁওয়ে সড়ক অবরোধ করেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

৭ জুলাই কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সোয়া চার ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন। রাত আটটার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।  

এদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন। এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চার দফা দাবিতে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন। বিকেল চারটায় নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে মিছিলের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির শুরু হয়। তবে পুলিশের বাধার মুখে মিছিলের গন্তব্য পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীরা নগরীর মুরাদপুর হয়ে বহদ্দারহাটের উড়ালসড়ক পর্যন্ত যেতে চাইলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের উদ্দেশ্যে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন।

কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে পথনাটক, কবিতা, গান পরিবেশন করে ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ জানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সোমবার (৮ জুলাই) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ও বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। 

এদিন বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন এবং জাতীয় পতাকা নিয়ে জড়ো হন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটক হয়ে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

এদিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। বৃষ্টির মধ্যে দুপুর ১২টা থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

৭ জুলাই বিকেল চারটায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি অংশে অবস্থান নেন। ৪৫ মিনিট ধরে অবরোধের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সকাল ১০ টা থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে জড়ো হতে থাকেন। পরে বেলা ১১টায় দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। আধা ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে যান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কয়েকটি সড়কে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এছাড়াও বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে সাতটা পর্যন্ত গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাথালিয়ায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহন আটকা পড়ে।

দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা রাজধানীর আগারগাঁও মোড় অবরোধ করেন। সোয়া ৬টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা দুই ঘণ্টা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ কর্মসূচির কারণে সড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকে যায়। পরে এক দফা দাবি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেন তারা।বাসস