‘নয় দলীয়করণ, নয় বিরাজনীতিকরণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে ইশতেহার ঘোষণা করে প্যানেলটি।
সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার পাঠ করেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনীতি সচেতন করা, ক্যাম্পাসকে দলীয় রাজনীতি মুক্ত রাখা এবং অ্যাকাডেমিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে ইশতেহারে ১১টি লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানেল। সেগুলো হলো-
দলীয়করণ ও বিরাজনীতিকরণ মুক্ত অ্যাকাডেমিক ক্যাম্পাস
প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাঠামোতে দলীয়করণের পথ বন্ধ করা। জুলাই অভ্যুত্থানের মানবাধিকার লঙ্ঘন ডকুমেন্টেশন করা। ১৫-১৭ জুলাই হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা। প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করা।
অ্যাকাডেমিক শিক্ষার মান, কারিকুলাম ও গবেষণা
গবেষণা বাজেট ২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করা। হল, আবাসন, লাইব্রেরি ও রিডিং ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন করা। স্মার্ট টেক অবকাঠামো (স্মার্ট ক্লাসরুম, হাই-স্পিড ইন্টারনেট, ক্যাম্পাস অ্যাপ, সিসিটিভি) তৈরি। নিয়মিত শিক্ষক মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থীদের ফিডব্যাকের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া। উপস্থিতির ভিত্তিতে নম্বর দেওয়ার নিয়ম শিথিল করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসকে উন্নত করা ও বই প্রকাশ বাড়ানো। জরুরি অনুবাদকর্মের উদ্যোগ নেয়া।
ক্যারিয়ার ও কর্মসংস্থান
প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যায্য বেতনে পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ তৈরি।
ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি রক্ষা করা। ধর্মীয় উৎসবের আগে-পরে পরীক্ষা না রাখা। আদিবাসীদের প্রধান উৎসবকে ক্যালেন্ডারে ছুটি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা। সংখ্যালঘু ও আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় স্থায়ী প্রশাসনিক কমিটি গঠন।
নারীবান্ধব ও সবার জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস
যৌন নিপীড়ন সেল কার্যকর করা ও অনলাইন আপডেট নিশ্চিত করা। আইনি সহায়তা সেল গঠন করা। সাইবার সিকিউরিটি সেল গঠন করা। অনলাইন-অফলাইনে নিপীড়ন বা বুলিংয়ের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং খাদ্যসংকট নিরসন
প্রতিটি হলে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে ক্যান্টিন ও ডাইনিং চালু করা। বাজেটে শিক্ষার্থীদের খাদ্যে ভর্তুকি। শহীদ ডা. মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার সংস্কার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা করা। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ই-হেলথ প্রোফাইল করা।
হলে ২৪ ঘণ্টা মেডিকেল সাপোর্ট রাখা। মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় কাউন্সেলিং সেন্টার ও হেল্পলাইনের ব্যবস্থা রাখা।
আবাসন সমস্যা দূরীকরণ
শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে রূপরেখা তৈরি করা।
পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতিকরণ
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের আপ ও ডাউন ট্রিপ সংখ্যা বৃদ্ধি করা। রাত ৮টা পর্যন্ত ডাউন ট্রিপ বাড়ানো।
ডিজিটালাইজেশন
বিজনেস ফ্যাকাল্টির ই-লাইব্রেরি পুনরায় চালু করা। ভর্তি থেকে সার্টিফিকেট পর্যন্ত সব লেনদেন স্মার্ট কার্ডে সম্পন্ন করা। ক্যাম্পাসের হটস্পটে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করা ।
খেলাধুলা ও শরীরচর্চা
সম্ভাবনাময় ক্রীড়াবিদদের বৃত্তি ও ইনজুরি সহায়তা দেয়া। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচক প্যানেল দিয়ে দল গঠন।
পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস ও স্যানিটেশন
পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা।