গাজায় যুদ্ধ বন্ধে শান্তি পরিকল্পনার প্রথম দফায় ইসরায়েল ও হামাস রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান বলে নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, শান্তি চুক্তির অর্থ হল খুব শীঘ্রই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের সৈন্যদের প্রত্যাহার করবে। এটি শক্তিশালী, টেকসই এবং চিরস্থায়ী শান্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ।
ট্রাম্প জানান, চুক্তিতে পৌঁছানো গেলে সেটার ঘোষণা দিতে সপ্তাহান্তে তিনি মিসর সফরে যাবেন। আগামী শনিবার নাগাদ তিনি মিসরের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে পারেন।
আলজাজিরা প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় বুধবার একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ট্রাম্প। তখন ওই কক্ষে প্রবেশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ট্রাম্পের হাতে মার্কো রুবিও একটি চিরকুট (নোট) ধরিয়ে দেন। ট্রাম্প চিরকুটটি পড়েন। এরপর ট্রাম্প চিরকুটে কী লেখা রয়েছে, সেটা সবাইকে জানান।
ট্রাম্প বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্রই আমাকে একটি নোট দিলেন। আমরা মধ্যপ্রাচ্যে একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। তাঁদের খুব শীঘ্রই আমাকে প্রয়োজন হবে। মধ্যপ্রাচ্যের কিছু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার জন্য আমাকে এখনই যেতে হবে।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের ওয়াল্টার রিড মেডিকেল সেন্টারে আগামী শুক্রবার সকালে পূর্বনির্ধারিত বার্ষিক স্বাস্থ্যপরীক্ষায় অংশ নেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরপর তিনি মিসরে যেতে পারেন।
এর আগে, গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
মিসরে তৃতীয় দিনের মতো সেই আলোচনা হয় বুধবার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তারা আলোচনা করেন। এদিন আলোচনায় যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারীরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিন।
এর আগে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো জিম্মি। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।আরটিভি