
গ্রামবাংলার লোকজ ঐতিহ্য আর মাটির গন্ধে ভরা এক নতুন গল্প নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে এসেছে ‘বেহুলা দরদী’। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সারাদেশের নয়টি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। দর্শকেরা সিনেমাটি দেখতে পাবেন—লায়ন সিনেমাস, গ্রান্ড রিভারভিউ, ম্যাজিক মুভি থিয়েটার, সুগন্ধা সিনেমা হল, মাধবী, নবীব, বনুতা, মিলন ও রাজ সিনেমায়।
পরিচালক সবুজ খানের প্রথম নির্মাণ ‘বেহুলা দরদী’ মূলত টাঙ্গাইল ও আশপাশের অঞ্চলে প্রচলিত লোকগাথা ‘বেহুলা নাচারি গীতিনাট্য’-এর গল্প থেকে অনুপ্রাণিত। একসময় গ্রামেগঞ্জে এই গীতিনাট্য ছিল বিনোদনের বড় মাধ্যম। সেই ঐতিহ্যের পটভূমিতেই তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।
মুক্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এফডিসির জহির রায়হান মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সবুজ খান, প্রযোজক মো. জাহিদুল ইসলাম, অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবুসহ সিনেমার কলাকুশলীরা।
পরিচালক বলেন, ‘আমার পূর্বপুরুষেরা একসময় গ্রামে গ্রামে বেহুলা নাচারি গীতিনাট্য করতেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এই সিনেমার জন্ম। আমি চেয়েছি আমাদের গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির গল্পটা বড়পর্দায় তুলে আনতে।’
অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘বেহুলা দরদী সিনেমার গল্প, গান, আর শুটিং—সবকিছুতেই আছে বাংলার মাটির গন্ধ। আমরা শুটিং করেছি ঠিক সেই জায়গাগুলোতে, যেখানে এই গল্পের জন্ম। আমার মনে হয় এই সিনেমা ওই অঞ্চলের ইতিহাস হয়ে থাকবে।’
প্রযোজক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে সিনেমা বানানো এখন রিস্কি হলেও আমি বিশ্বাস করি—বাংলার গল্পই একদিন বিশ্বে জায়গা করে নেবে। আমরা সিনেমাটি আন্তর্জাতিক উৎসবগুলোতেও পাঠাব।’
সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, প্রাণ রায়, সূচনা সিকদার, আশরাফুল আশীষ, আজিজুন মীমসহ মধুপুর অঞ্চলের স্থানীয় শিল্পীরা। চিত্রগ্রহণ করেছেন নাহিয়ান বেলাল, সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন নির্ঝর চৌধুরী, সম্পাদনা করেছেন আমিনুল সিকদার।
গল্পে দেখা যাবে, নাচারি দলের প্রধান ভোলা মিয়া তাঁর দলটিকে টিকিয়ে রাখতে লড়ছেন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে। লোকসংস্কৃতির টান, বেঁচে থাকার সংগ্রাম আর জীবনের দরদে ভরা এই গল্প ‘বেহুলা দরদী’—একটি সিনেমা নয়, এক টুকরো গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি।