
বুধবার (৩১ ডিসেম্ব) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ পড়ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও তারেক রহমানসহ মুসল্লিরা।
লাখো মানুষের অশ্রু আর গুমরে মরা কান্নায় সম্পন্ন হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় জানাজা।
বুধবার (৩১ ডিসেম্ব) বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা শুরু হয়। ৩টা ৫ মিনিটে জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, বিদেশি কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
এদিন সকাল থেকেই প্রিয় নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো মানুষের ঢল নামে জানাজাস্থল ও এর আশপাশের এলাকায়। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ছাড়িয়ে জনস্রোত খামারবাড়ি, আসাদগেট এবং ফার্মগেট এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
জানাজা শুরুর আগে প্রিয় নেত্রীর স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। শীর্ষ নেতারা এবং পরিবারের সদস্যরা। তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আসা ছিল আকস্মিক। কিন্তু দেশের প্রয়োজনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অপরিহার্য।
এর পর খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মা খালেদা জিয়ার পক্ষে ক্ষমা চেয়ে নেন এবং মরহুমা যেন বেহেশতবাসী হন, সে জন্য সবাইকে দোয়া করার অনুরোধ জানান।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও মানুষের শোকের ছায়া কাটেনি। জানাজা শেষে যখন মরদেহবাহী গাড়িটি দাফনের উদ্দেশে রওনা হয়, তখনও রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো মানুষকে দুই হাত তুলে মোনাজাত করতে দেখা যায়। এই জানাজার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির একটি বর্ণিল ও দীর্ঘ অধ্যায়ের আনুষ্ঠানিক বিদায় সম্পন্ন হলো।
উল্লেখ্য যে, গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার অবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং তিনি সংকটময় মুহূর্ত পার করছিলেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় মৃত ঘোষণা করেন তাকে চিকিৎসকরা। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।