
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খরচের জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে ভিডিওবার্তা দেয়ার পর ৭ ঘণ্টায় ১২ লাখ টাকা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সবশেষ পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
পোস্টে জারা লিখেন, ‘মাত্র ৭ ঘণ্টায় আপনারা ১২ লাখ টাকারও বেশি পাঠিয়েছেন। এতটা অভূতপূর্বভাবে আপনারা পাশে দাঁড়াবেন, তা সত্যিই আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। আপনাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।’
এনসিপির এ নেত্রী লিখেন, আমাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮০ টাকা। আর ৩৪ লাখ টাকা সংগ্রহ সম্পন্ন হলেই আমরা ফান্ডরেইজিং বন্ধ করে দেব।
তিনি আরও লিখেন, ‘আমরা অবগত আছি যে রাত ২টার পর থেকে নির্ধারিত লিমিট অতিক্রম করার কারণে বিকাশে আর টাকা পাঠানো যাচ্ছে না। আপাতত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডোনেশন গ্রহণ করা যাচ্ছে।’
এর আগে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে নির্বাচনে খরচের জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তা দেন এনসিপির এ নেত্রী। এতে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে একজন প্রার্থী আইনগতভাবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ বা ভোটার প্রতি ১০ টাকা খরচ করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে শোনা যায় একেকজন একজন প্রার্থী ২০ থেকে ৫০ কোটি টাকা খরচ করেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে বলেন মাত্র পঁচিশ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। ফলে প্রায় সকলেরই সংসদে যাওয়ার যাত্রাটাই শুরু হয় আইন ভাঙা ও মিথ্যা বলার মাধ্যমে। আমি এই অসততা ও মিথ্যার রাজনীতি করবো না।’
জারা বলেন, ‘আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে আইনে অনুমোদিত টাকার বাইরে আমি এক টাকাও খরচ করবো না। অনেকে বলেছেন, এত অল্প বাজেটে নির্বাচন করা অসম্ভব। আমি তাদের বলেছি, নতুন বাংলাদেশ গড়তে অন্য উপায় নেই।’
তিনি বলেন, নির্বাচনের খরচ যখন ১০ কোটি বা ২০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়, তখন সেই টাকা তোলার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর চাঁদাবাজি আর টেন্ডারবাজি করাটা তাদের জন্য ‘বাধ্যতামূলক’ হয়ে দাঁড়ায়। এভাবেই রাজনীতিটা সাধারণ মানুষের হাত থেকে ছিনতাই হয়ে মুষ্টিমেয় কিছু সিন্ডিকেটের হাতে চলে যায়।
জারা উল্লেখ করেন, ‘আমার আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী এই নির্বাচনে আমি মোট ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮০ টাকা ব্যয় করতে পারবো। আমি এই টাকাটা আপনাদের কাছ থেকে চাই।’
এরপর নিচে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিকাশ নম্বর দেন। তিনি বলেন,
এগুলো একদম নতুন অ্যাকাউন্ট। কত টাকা আসছে আর কত খরচ হচ্ছে, প্রতিটি টাকার হিসাব আমি স্বচ্ছভাবে আপনাদের সামনে প্রকাশ করবো প্রমাণসহ।
জারা আরও বলেন, ‘আমি যদি একটা আসনের জন্যও দৃষ্টান্ত দেখাতে পারি যে, জনগণের কাছ থেকে টাকা তুলে জনগণের সঙ্গে ক্যাম্পেইন করে নির্বাচনে জেতা সম্ভব, তাহলে আগামী দিনে এমন অসংখ্য মানুষ এগিয়ে আসবেন, যারা সৎ, যোগ্য এবং রাজনীতিতে আসার সাহস দেখাবেন। এই লড়াইটা আপনি, আমি মিলে করলেই আমরা জিতে যাবো। আমি আপনাদের সাহায্যের আশায় থাকবো।’