
Four aspiring candidates from Faridganj trying to consolidate their own posirtions.
মোঃ আনিছুর রহমান সুজনঃ ফরিদগঞ্জ থেকে: আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই উদ্বেগ বাড়ছে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। এর ব্যতিক্রম নয় চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। বিশেষ করে বিএনপির উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মানে এমপি নির্বাচিত হওয়া, এমন ভাবনাতেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। সর্বোচ্চ মহেল তদবির ছাড়াও নিজের মাঠের অবস্থান জানান দিতে প্রার্থীরা নিজেরা, দলীয় নেতাকর্মীরা নানাভাবে বিশেষ করে নিজেদের পক্ষে মাঠ গরম করে রাখছেন। এক্ষেত্রে তাঁরা বেছে নিচ্ছে বিএনপির সিনিয়র ভাইসচেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১দফা। প্রত্যেক মনোনয়ন প্রত্যাশী একপাশে ৩১দফার কথা অন্য পাশে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে লিফলেট ছাপিয়ে ব্যাপক প্রচারণায় ব্যস্ত।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হওয়া দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক লায়ন মো. হারুনুর রশিদ সপ্তাহের দুই/তিন দিন নিজের নির্বাচনী এলাকায় নানা ধরনের সভা সমাবেশ করে চলছেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি বাজারে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও পথসভায় বক্তব্য রাখছেন। সর্বশেষ তিনি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তারেক রহমানের সর্বশেষ বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারটি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শুনছেন এবং তাঁর বক্তব্যকে অনুধাবন করে কর্মীদের দিকনিদের্শনা দিচ্ছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে তার নেতাকর্মীরা প্রচারণা অব্যাহত রাখছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক দানবীর এম এ হান্নানও পিছিয়ে নেই প্রচরণায়। ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ছাড়াও, যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে তারুণ্যের সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত এম এ হান্নানকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে মিছিল সমাবেশ করছেন। তার সমর্থক ও নেতাকর্মীদের এটাই কথা এম এ হান্নান দলের মধ্যে বড় ধরনের ঐক্য সৃষ্টি করতে পেরেছেন প্রতিটি ইউনিটের মাধ্যমে। যার ফল আসবেই। তারপরও আমরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোতাহার হোসেন পাটওয়ারী এবং তার নেতাকর্মীরা মাঠে কাজ করে চলছেন। প্রতি সপ্তাহে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ তিনি নিজে বা দলীয় কর্মীরা প্রতিটি বাজারে করছেন। তিনি বলেন আমি দলের অবহেলিত নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে তৃণমূলে মানুষের কাছে যাচ্ছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে দলের সকল নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে একটা ঐক্যবদ্ধ ফরিদগঞ্জ গড়ে তুলবো। আরেক
মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য হুমায়ুন কবির বেপারীর পক্ষেও ব্যাপক প্রচারণা চলছে। প্রতিটি ইউনিয়নে তার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ৩১দফার লিফলেট বিতরণ করে চলছেন। বিতরণ পূর্ব প্রতিটি পথসভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী হুমায়ুন কবির বেপারী। তিনি আরো বলেন দেড় যুগ পরে এদেশের মানুষ স্বস্তিতে নির্বিঘ্নে একটি নির্বাচন পাবে তাই সকলের অংশগ্রহণ এই সুন্দর নির্বাচন হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলে তৃণমূলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে।
এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিকের সমর্থকরাও ৩১ দফার লিফলেট নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা থাকবে এটা স্বাভাবিক। ইতিমধ্যেই একে অপরকে ঘায়েল করার নোংরা রাজনীতি প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু প্রতিদ্বন্ধিতার আড়ালে নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছুঁড়াছুড়ি দলের জন্য হিতকর নয়। বরং মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্ধিতা করলে দলের লাভ হবে। এতে দলের প্রচারণা বৃদ্ধি পাবে। বিপরীত অবস্থা হলে মনোনয়ন যিনি পাবেন, তার পক্ষে সকলকে একজোট করার কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।