বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে এসে ছাত্রদলের তোপের মুখে পড়েছেন বিতর্কিত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে গেলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। ডা. সাবরিনাকে তারা আওয়ামী লীগের দালাল বলে স্লোগান দেন। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি প্রাইভেট কারে করে চলে যান।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘বিতর্কিত ডাক্তার সাবরিনা করোনার সার্টিফিকেট জালিয়াতি মামলায় অপরাধী। মহিলা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাজারে যাওয়ার সাহস পেল কোথা থেকে? তাকে যারা নিয়ে গেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হোক।’
অভিযোগ রয়েছে, ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অসৎ উদ্দেশ্য এবং কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার নামক একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও অন্যদের যোগসাজশে অভিজ্ঞতাহীন, নিবন্ধনবিহীন, ট্রেডলাইসেন্সবিহীন তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর ওভাল গ্রুপের নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারকে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।
বিনামূল্যে বুথ থেকে করোনার স্যাম্পল কালেকশনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে অনুমোদন নিয়ে বুথ থেকে স্যাম্পল কালেকশন না করে ডা. সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর নির্দেশে তার অফিসের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টেস্ট ফি হিসেবে প্রতিটি টেস্টের জন্য আনুমানিক ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে পরীক্ষা না করে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে ১৫ হাজার ৪৬০টি রিপোর্ট প্রস্তুত করে তা সেবা গ্রহীতাদের নিকট সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়া সরকার-ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং লকডাউন চলাকালে ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন সময়ে লকডাউনের মধ্যে মাত্র তিন মাসে ওভাল গ্রুপ এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ভেলবিল সিকিউরিটি সার্ভিসের প্রাইভেট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা হয়েছে, যা করোনা টেস্টের টাকা বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় এনআইডি তৈরির অভিযোগও রয়েছে। ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট সাবরিনার বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় প্রতারণা মামলা করেন গুলশান থানার নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মমিন মিয়া। মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবরিনার দুটি এনআইডি কার্ড সক্রিয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি টের পাওয়ার পর বিস্তারিত জানতে ইসির কাছে তথ্য চেয়েছে। সাবরিনা ২০১৬ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় দ্বিতীয়বার ভোটার হন। তিনি প্রথমে ভোটার হন সাবরিনা শারমিন হোসেন নামে। একটিতে জন্মতারিখ ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর, অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। প্রথমটিতে স্বামীর নাম আর এইচ হক আর দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম লেখা হয়েছে আরিফুল চৌধুরী।