জুলাই অভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব নেয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটে ধনী-গরিবের বৈষম্য এবং আয়ের বৈষম্য কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর বাংলা মোটরের রূপায়ন টাওয়ারে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এমন মন্তব্য করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ বলেন, সরকার সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারলেও সমাধানগুলো বাস্তবমুখী করতে পারেনি। বাজেটে ধনী-গরিবের বৈষম্য ও আয়ের বৈষম্য কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
কর ফাঁকি দেয়ার বিষয়ে বাজেটে শক্ত অবস্থান নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, করদাতাদের বিষয়ে বাজেটে আগের মতোই পদক্ষেপ লক্ষ করা গেছে। যারা কর ফাঁকি দেয়, তাদের করের আওতায় আনার প্রচেষ্টা দেখা যায়নি। উল্টো মধ্যবিত্তের ওপর চাপ বেড়েছে।
জুলাই অভ্যত্থানের স্পিরিট ধারণকারী ছাত্রদের এই দল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট না বাড়ানোর সমালোচনা করেছে।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বাজেট কমানো উচিত হয়নি বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর নেই। এছাড়া ই-কমার্সে কর বৃদ্ধি উদ্যোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদের মতে, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত নয়।
তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের আহতদের জন্য বরাদ্দ রাখার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানালেও এর সর্বোচ্চ ও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতেরও আহ্বান জানান।
ব্রিফিংয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, বড় বড় রাঘব বোয়ালদের করের আওতায় এনে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি এবারের বাজেটে।
বাজেটের সব খবর
প্রসঙ্গত, এবার জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। এটি দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট।। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২%। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে। এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এবং অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দেয়া হয়েছে। সময়।