
দেশের আর্থিক খাতে দীর্ঘদিনের সংকট মোকাবিলায় বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে দুর্বল ও সমস্যাগ্রস্ত ৯টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বোর্ড মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত আসে।
নতুন সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন হবে সদ্য জারি করা ‘ব্যাংক রেজুলিউশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ অনুযায়ী— যা ব্যর্থ ব্যাংক ও এনবিএফআইকে একীভূত, পুনর্গঠন বা লিকুইডেট করার প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাঠামো।
বন্ধ হওয়ার তালিকায় থাকা ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে—এফএএস ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, আবিভা ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো মোট খেলাপি ঋণের ৫২ শতাংশ দায় বহন করছে; যার পরিমাণ গত বছরের শেষে দাড়ায় ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, এই ৯ প্রতিষ্ঠানে আটকে আছে ১৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার আমানত। এর মধ্যে ব্যক্তিগত আমানত ৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা এবং ব্যাংক ও করপোরেট আমানত ১১ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্বল নজরদারি, সম্পর্কিত দলকে ঋণ, জমে থাকা ঋণ পুনরুদ্ধারের ব্যর্থতা, কৃত্রিমভাবে সম্পদ বেশি দেখানো— এসব কারণে বহু প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর ধরে কার্যত দেউলিয়া অবস্থায় ছিল।
এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ এনবিএফআইকে ‘রেড ক্যাটাগরিতে’ চিহ্নিত করে; সেখান থেকেই ৯টিকে বন্ধের তালিকায় আনা হয়েছে। বাকি ১১টি প্রতিষ্ঠানের ভাগ্য এখনও ঝুলে আছে। তাদেরকে পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— সিভিসি ফাইন্যান্স, বে লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, হজ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, আইআইডিএফসি, উত্তরা ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স ও ইউনিয়ন ক্যাপিটাল।