মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীরের কান্দি এলাকায় কুমার নদীর পাড়ে অবস্থিত শতবর্ষী একটি বটগাছকে ‘শিরক’র উৎস আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে স্থানীয় কিছু মুসল্লি ও আলেম গাছটির ডালপালা কেটে ফেলেন। বর্তমানে চলছে শিকড় ও গোড়া কাটার প্রস্তুতি।
এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকে বিষয়টিকে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংসের সামিল বলে মন্তব্য করেছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বটগাছটি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও কৌতুহলের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। কেউ কেউ এখানে শিরনি ও মিষ্টি দেন, অনেকে আবার লাল কাপড় বেঁধে রাখেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূর্ণিমা ও অমাবস্যার রাতে গাছটির নিচে পূজা করেন এবং রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি কামনায় মানত করেন।
তবে এই আচার-অনুষ্ঠানকে ‘শিরক’ দাবি করে স্থানীয় মুসল্লি ও আলেমদের একটি অংশ গাছটি ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেয়। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, শিরক হলো আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্ত্বাকে উপাস্য মনে করা, যা ধর্মীয়ভাবে বড় পাপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বটগাছটি সত্তার হাওলাদার নামে একজনের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠেছে। গাছটির বয়স এক শতাব্দীরও বেশি বলে ধারণা করা হয়।
মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, বটগাছটি কাটার বিষয় আমরা জেনেছি। গাছটির গোড়া এখনও জীবিত আছে। জেলার বন কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ আমাদের অনেকেই ওই স্থানে গিয়ে গাছকাটা বন্ধ করেছেন। তারা আমাকে জানিয়েছে, স্থানীয় জনতা গাছটি কাটার চেষ্টা করেছেন। যারা কাটার উদ্যোগ নিয়েছেন, তাদের আমরা ডেকেছি। কারণ জানতে চেয়েছি। তারা বুঝতে পেরে গা ঢাকা দিয়েছে। যারা এ ধরনের অন্যায় কাজ করবেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।