প্রতিদিন কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে আমরা যে কিবোর্ড ব্যবহার করি, তার অক্ষর বিন্যাস অনেকের চোখে অদ্ভুত লাগে। ইংরেজি বর্ণমালা ‘A’ দিয়ে শুরু না করে উপরের সারিতে কেন ‘Q’ দিয়ে শুরু? এর পেছনে আছে এক ইতিহাস।
১৮৭০-এর দশকে মার্কিন উদ্ভাবক ক্রিস্টোফার ল্যাথাম শোলস প্রথম বাণিজ্যিক টাইপরাইটার তৈরি করেন। শুরুর দিকে টাইপরাইটারে অক্ষরগুলো ধারাবাহিকভাবে A থেকে Z পর্যন্ত সাজানো ছিল। তবে দ্রুত টাইপ করার সময় টাইপবারগুলোর সংঘর্ষের সমস্যা দেখা দেয়, যা লেখার গতি কমিয়ে দিত এবং যন্ত্রের মেরামতকে ঝামেলাপূর্ণ করে তুলত।
সমস্যার সমাধান হিসেবে শোলস একটি কৌশল নেন- ঘন ঘন একসঙ্গে ব্যবহৃত অক্ষরগুলোকে কিবোর্ডে দূরে রাখা, যাতে টাইপবারগুলোর সংঘর্ষ কমে আসে। এভাবেই তৈরি হয় আজকের পরিচিত QWERTY লেআউট, নামকরণ করা হয় উপরের সারির প্রথম ছয়টি অক্ষরের নাম অনুসারে।
QWERTY লেআউট দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং টাইপরাইটারের যান্ত্রিক সমস্যা সমাধান হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীতে কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে যখন কিবোর্ড ব্যবহৃত হয়, তখনও এই লেআউটই ব্যবহার হয়ে যায়।
যদিও আধুনিক কিবোর্ডে টাইপবারের সংঘর্ষের সমস্যা নেই, পুরনো অভ্যাস এবং ব্যাপক ব্যবহারের কারণে QWERTY লেআউট আজও বিশ্বজুড়ে কম্পিউটার কিবোর্ডের মানদণ্ড।
QWERTY ছাড়াও টাইপ দ্রুত করার জন্য তৈরি হয়েছে DVORAK ও AZERTY লেআউট, তবে মানুষের নতুন লেআউট শিখার আগ্রহ কম থাকায় এগুলো খুব বেশি জনপ্রিয় হয়নি।
তাই কিবোর্ডের অক্ষর এলোমেলো বিন্যাস কোনো ত্রুটি নয়, বরং এক সময়কার প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান থেকে উদ্ভূত একটি বুদ্ধিদীপ্ত লেআউট, যা আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।আরটিভি