বর্তমান সময়ে ইউরোপের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। পিএসজির খেলা মানেই যেন ফুটবল সমর্থকদের মনে বাড়তি আকর্ষণ কাজ করে। কারণ এই ক্লাবের হয়েই যে খেলেন বর্তমান সময়ের তিন সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমার জুনিয়র। ফরাসি লিগ ওয়ানের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা চলতি আসরেও দারুণ ফর্মে রয়েছে, শিরোপার দৌড়ে এখন সবার উপরে অবস্থান করছে।
লিগ ওয়ানের ২০তম রাউন্ডের দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে স্টেড ডি রেঁসের বিপক্ষে গোলের দেখা পাননি আর্জেন্টাইন মহাতারকা মেসি ও ফরাসি গতিদানব এমবাপ্পে। তবে ব্রাজিলিয়ান পোষ্টারবয় নেইমার গোল করে দলকে জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু দশ জনের দলে পরিনত হওয়া পিএসজির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি। শেষ মুহূর্তে ফোলারিন বালোগুনের গোলে সমতায় ফেরে সফরকারীরা। তাতে পার্ক দি প্রিন্সেসের ম্যাচটি ১-১ গোলের ড্রয়ে মাঠ ছেড়েছে দুই দল।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে লিগের ম্যাচে ঘরের মাঠে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল পিএসজি। ম্যাচের শুরুতেই পিএসজিকে এগিয়ে নেওয়ার বড় সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। তৃতীয় মিনিটে আশরাফ হাকিমির বাড়ানো বলে ডান পায়ে শট নেন মেসি। কিন্তু বল জালে না জড়িয়ে গোলবারের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়। বিশ্বকাপজয়ী তারকার এমন মিসে কিছুটা হতাশই হন স্বাগতিক সমর্থকরা।
দূর্বল দল হলেও ভড়কে যায়নি পয়েন্ট তালিকায় ১১ নম্বরে থাকা রেঁস। বরং মেসির হতাশার কিছুক্ষণ পরেই আক্রমণ শুরু করে দেন ফোলারিন বালোগুন-জুনিয়া ইতোরা। এতে প্রথমার্ধের পুরোটা সময় দিশেহারা হয়ে পড়েন পিএসজির রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। বিপরীতে তারকায় ঠাসা পিএসজি যেন নিজেদের হারিয়েই খুজছিলেন মাঠে। ফলে গোলশূন্য অবস্থাতেই প্রথমার্ধের বিরতিতে যায় দুদল।
বিরতি থেকে ফিরে দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। রেঁস এবার সেই লড়াইয়ে না পারলেও এগিয়ে যায় পিএসজি। ম্যাচের ৫১ মিনিটে মেসির বাড়ানো বল বাঁধিয়ে দেন রেঁসের রক্ষণভাগের এক খেলোয়াড়। তবে জুয়ান বার্নাটের অ্যাসিস্টে গোলরক্ষকসহ ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে জালে বল জড়ান নেইমার। যার তার চলতি মৌসুমে ১৭ ও লিগ ওয়ানে ১২তম গোল।
তবে এগিয়ে যাওয়ার পরেই বড় বিপত্তি বাঁধে পিএসজির ডি-বক্সের সামনে। রেঁসের খেলোয়াড়কে ফাউল করে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখেন মার্কো ভেরাত্তি। তবে রেফারি ভিএআর পরীক্ষা করে লাল কার্ড দেন ভেরাত্তিকে। এতে খেলার ৩০ মিনিটের মতো বাকি থাকতেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় কাতারি মালিকানাধীন ক্লাবটি। কিছুটা দূর্বলতা পেয়ে পরে গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে রেঁস। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোনো গোল আদায় করতে পারেনি দলটি।
অপর দিকে পিএসজি দশ জনের দল হয়েও গোল করার কয়েকটি সুবর্ণ সুযোগ পায়। তবে সেগুলো কাজে লাগাতে পারেননি মেসি, এমবাপ্পে, রামোসরা। তাতে ব্যবধান আর বাড়ানো হয়নি দলটির। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে এসে সফলতার মুখ দেখে রেঁস। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে কমরি ডুম্বিয়ার পাস থেকে পিএসজি রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে গোলকিপার ডোনারুম্মাকে বোকা বানিয়ে জালে বল জড়ান ফোলারিন বালোগুন। তাতে ১-১ গোলের সমতা ফেরে খেলায়। এর একটু পরেই রেফারি ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন।
এই ড্রয়ের পরও ২০ ম্যাচে ১৫ জয়, ৩ ড্র ও ২টি হার নিয়ে শীর্ষে থাকা পিএসজির সংগ্রহ ৪৮ পয়েন্ট। আর এক পয়েন্ট পেয়ে ১১তম অবস্থানে এসেছে স্টেড ডি রেঁসে। লিগে ২০ ম্যাচ শেষে ৫ জয়, ১১ ড্র ও ৪টি হার নিয়ে তাদের পয়েন্ট এখন ২৬। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।