নেপালে তরুণদের বিক্ষোভের মুখে সরকারের পতন ও এ থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশিদের বাড়ির বাইরে বের না হয়ে, নিজ নিজ অবস্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ পরামর্শ দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে আপাতত নেপালে ভ্রমণ না করার জন্য সব বাংলাদেশি নাগরিককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, বর্তমানে নেপালে প্রায় ৩০০ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক। এছাড়া কিছু ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার কর্মীও রয়েছেন।
দুর্নীতি ও সামাজিক মাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভের মুখে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন তিনি, যা গ্রহণ করা হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে অলি লিখেছেন,
মাননীয় প্রেসিডেন্ট, নেপালের সংবিধানের ৭৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর, দেশের বর্তমানে বিরাজমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংবিধান অনুসারে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান এবং সমাধানের দিকে আরও পদক্ষেপ নেয়ার জন্য, সংবিধানের ৭৭ (১) (ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, আজ (মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর) থেকে আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করছি।
প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নেপালে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়া হয়।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হলেও, একপর্যায়ে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্টের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলে শুরু হয় সংঘাত।
এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করে প্রশাসন। এই আন্দোলনকে ‘জেন-জি রেভল্যুশন’ নাম দেন বিক্ষোভকারীরা।
দেশটিতে দু’দিনের সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৯ জন। আহত হয়েছেন অনেকে। হতাহতের দায় নিয়ে আগেই পদত্যাগ করেন নেপালের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। আর অবশেষে চাপের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রীও।