দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পথে লি জে-মিয়ং। ছবি : এএফপি
কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকটের পর অবশেষে নতুন প্রেসিডেন্ট পেল দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির রক্ষণশীল প্রতিদ্বন্দ্বী কিম মুন-সু-কে ব্যাপক ব্যবধানে পরাজিত করেছেন বামপন্থী প্রার্থী লি জে-মিয়ং। মঙ্গলবার (৩ জুন) দিনগত রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন। খবর এএফপির।
সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মোট ব্যালটের ৯৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ গণনা শেষ। তবে প্রাপ্ত ফলাফলে কিম মুন-সুর পক্ষে লি জে-মিয়ংকে পরাজিত করার মতো পর্যাপ্ত ভোট পাওয়া গাণিতিকভাবে অসম্ভব।
দুই দশকের মধ্যে এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল সর্বোচ্চ, যা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জনগণের গভীর আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলের সামরিক আইন ঘোষণার ঠিক ছয় মাস পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।
এর আগে এদিন সন্ধ্যায় এক্সিট পোলে বামপন্থী ডেমোক্রেটিক পার্টির লি জে-মিয়ং ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলে দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে রক্ষণশীল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) প্রতিদ্বন্দ্বী কিম মুন-সু ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পাওয়ার কথা বলা হয়।
এক্সিট পোলের ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বাইরে লি-এর শত শত সমর্থক উল্লাসে ফেটে পড়ে। পার্লামেন্টের অভ্যন্তরে বসে থাকা দলীয় কর্মকর্তারা ‘লি জে-মিয়ং’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটির জরিপগুলোতে কিমের (ইয়ুনের শ্রমমন্ত্রী) চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল লি। কিম তার দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে সংগ্রাম করতে ব্যস্ত ছিলেন।
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল সর্বোচ্চ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিকেলের দিকে প্রায় ৭৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে, যা প্রায় দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। রাত ৮টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ব্যালট গণনা শুরু হয়।
বুধবার সকালেই দক্ষিণ কোরিয়ার পরবর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন লি জে-মিয়ং। তবে নবনির্বাচিত সরকার প্রধানকে বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।
দেশটির নাগরিকরা বলছেন, তারা দক্ষিণ কোরিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। ৬৪ বছর বয়সী ক্যাব চালক চোই সুং-উক এএফপিকে বলেন, ‘আমি আশা করি পরবর্তী প্রেসিডেন্ট আদর্শগত যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তি ও ঐক্যের পরিবেশ তৈরি করবেন।’
২০ বছর বয়সী নোহ মিন-ইয়ং বলেন, নির্বাচনের ফলাফলে ‘স্বস্তি’ পেয়েছি। এটি একটি কঠিন পথ ছিল। আমি খুশি কারণ মনে হচ্ছে আমরা গত ছয় মাস ধরে যে জন্য লড়াই করেছি তা আমরা পেয়েছি।’