আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে এ বছর ১২০০ টন ইলিশ মাছ ভারতে রফতানির অনুমতি পেয়েছে ৩৭ প্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে ইলিশ পাঠানো শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি (প্রায় সাড়ে ৩৭ টন) ইলিশ পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে এইসব ইলিশ রফতানি করে ছয়টি প্রতিষ্ঠান।
রফতানিকারকরা জানিয়েছে, প্রতিকেজি ইলিশের রফতানি মূল্য ছিল ১২ ডলার ৫০ সেন্ট। যা বাংলাদেশি অর্থে ১৫২৫ টাকা।
বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রন কেন্দ্রের ফিসারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসার সজিব সাহা জানান, প্রথম চালানে ভারতে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রফতানি হয়েছে। মান পরীক্ষা করে রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। গত বছর ইলিশ রফতানির অনুমতি ছিল ২ হাজার ৪২০ টন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রফতানি হয়েছিল মাত্র ৫৩২ টন মাছ।
জানা যায়, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বৃহৎ বাণিজ্য সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এ সম্পর্ক আরো জোরদার করতে দেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় খাবার ও পণ্য পাঠানো হয় ভারতে। পদ্মার রূপালী ইলিশ স্বাদ আর গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় দুই বাংলায় বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় অতিথি আপ্যায়নে খাবারের প্রধান তালিকায় ইলিশ রাখে ওপারের বাঙালিরা।
আগে ইলিশ সাধারণ রফতানি পণ্যের তালিকায় উন্মুক্ত থাকলেও উৎপাদন সংকট দেখিয়ে ২০১২ সালে দেশের বাইরে রফতানি বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ২০১৯ সাল থেকে বিশেষ বিবেচনায় কেবল দুর্গাপূজায় ইলিশ রফতানির সুযোগ মেলে।
এবছরও ব্যবসায়ীরা দুর্গাপূজাকে ঘিরে ইলিশ রফতানির অনুরোধ জানান অন্তবর্তী সরকারকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ৩৭ প্রতিষ্ঠানকে ১২০০ টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দেয়। ৫ অক্টোবরের মধ্যে ইলিশ রফতানি শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে মৎস অধিদফতর।
এদিকে, ভারতে রফতানির খবরে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ইলিশ রফতানিকারকরা দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য জোরদারের কথা বলছেন। তবে সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, রফতানির ফলে যে দাম বাড়বে, তা নাগালের বাইরে চলে যাবে।
ইলিশ রফতানিকারক সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি ইলিশ রফতানির অনুমতি পেয়েছেন। ইলিশ রফতানি সামনের দিনে দুদেশের বাণিজ্য জোরদার হবে।
সাধারণ ক্রেতা রহমত জানান, একমাস আগেও দেশের বাজারে প্রতিকেজি ইলিশের দাম ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা হলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। ভারতে যাচ্ছে ১৫০০ টাকা দরে আর দেশের মানুষ কিনতে গেলে বেশি।
বেনাপোল বাজারের ইলিশ বিক্রেতা শহিদ জানান, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে বাজারে। রফতানিতেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে।