News update
  • Five Shariah Banks to Merge Into State-run Sammilito Islami Bank     |     
  • Dhaka’s air ‘unhealthy for sensitive groups’ Wednesday morning     |     
  • US proposes that the UN authorize a Gaza stabilization force for 2 years     |     
  • Democrat Zohran Mamdani is elected New York City mayor     |     
  • Martyr Mugdha's brother Snigdha steps into politics with BNP     |     

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্রিকেট 2022-07-17, 2:09pm




বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বোলিং নৈপুন্যে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলো সফরকারী বাংলাদেশ। 

গতরাতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।  প্রথমবারের মত ৫ উইকেট শিকারে তাইজুল খরচ করেছেন ২৮ রান। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নেয় টাইগাররা। এই নিয়ে চতুর্থবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ। এর আগে - ২০০৯, ২০১২ ও ২০২১ সালে ক্যারিবিয়দের হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।  

প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশ। তাই শেষ ওয়ানডেটি নিয়মরক্ষার হলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিতে মরিয়া ছিলো টাইগাররা। 

সেই লক্ষ্যে গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সিরিজের আগের দুই ম্যাচেও টস জিতে প্রথমে বোলিংই করেছে বাংলাদেশ। একাদশে পেসার শরিফুল ইসলামের জায়গায় স্পিনারকে তাইজুল ইসলামকে নিয়ে একাদশ সাজায়  বাংলাদেশ। 

বল হাতে ইনিংসের প্রথম দুই ওভারে সাফল্য পাননি বাংলাদেশের আগের ম্যাচের হিরো নাসুম আহমেদ ও পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। তবে তৃতীয় ওভারেই তাইজুলের হাতে বল তুলে দেন টাইগার অধিনায়ক। ২৮ মাস পর ওয়ানডেতে বল ডেলিভারি দিয়েই উইকেট তুলে নেন তাইজুল। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দেন তিনি। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার ব্রান্ডন কিংয়ের স্টাম্প ভাঙ্গেন ২০১৪ সালে নিজের অভিষেক ওয়ানডেতে হ্যাট্টিক করা তাইজুল। ৮ রান করেন কিং। 

নিজের দ্বিতীয় ওভারেও উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন তাইজুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরেক ওপেনার  ২ রান করা শাই হোপকে বোকা বানিয়ে স্টাম্প আউট করেন তাইজুল। 

তাইজুলের সাথে উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন পেসার মুস্তাফিজ। নিজের তৃতীয় ওভারে ৪ রান করা শামারাহ ব্রুকসকে লেগ বিফোর আউট করেন ফিজ। এতে ১৬ রানে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

এরপর দলের হাল ধরেন কিচি কার্টি ও অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। উইকেটের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে দারুন এক জুটি গড়েন তারা। দেখেশুনে খেলে ১২৮ বলে ৬৭ রান যোগ করেন তারা। জুটিতে সমান ৩৩ করে রান তুলেন কার্টি ও পুরান। 

২৭তম ওভারে কার্টি-পুরান জুটি ভেঙ্গে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার নাসুম। নাসুমকে মিড-অন দিয়ে মারতে গিয়ে তামিমকে ক্যাচ দেন কার্টি। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৬ বলে ৩৩ রান করেন কার্টি। 

এরপর রোভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে দলের স্কোর ১শ পার করেন পুরান। তবে তাইজুলের কুইকার ডেলিভারিতে শেষ হয় পাওয়েলের ইনিংস। ২৯ বলে ১৮ রান করেন তিনি। পুরান-পাওয়েল যোগ করেন  ৩৪ রান।

পাওয়েল ফিরে যাবার পর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন পুরান। এজন্য ৯৩ বল খেলেছেন তিনি। 

নিজের নবম ওভারে চতুর্থ শিকার হিসেবে   কিমো পলকে ব্যক্তিগত ৬ রানে বিদায় দেন তাইজুল। এতে ১২৫ রানে ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমন অবস্থায় দেড়শর নিচে প্রতিপক্ষ গুটিয়ে যাওয়ার শংকায় পড়ে।  পথে বাঁধা হয়েছিলেন পুরান। 

সেই পুরানকে ৪৩তম ওভারে দলীয় ১৫০ রানে বিদায় দেন তাইজুল। পুরানকে বোল্ড করে ইনিংসের পঞ্চম উইকেট শিকার করেন তিনি। নিজের ১০ম ম্যাচে এসে ইনিংসে প্রথম পাঁচ উইকেট শিকারের স্বাদ নিলেন তাইজুল। 

পুরানের বিদায়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৭৮ রানের সংগ্রহ এনে দেন রোমারিও শেফার্ড। ২২ বলে ১৯ রান করেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ দুই উইকেট নিয়েছেন নাসুম ও মুস্তাফিজ। ১০ ওভার বল করে ২ মেডেনে ২৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। ২টি করে শিকার ছিলো, নাসুম-মুস্তাফিজের। ১টি উইকেট নেন মোসাদ্দেক। 

১৭৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু ছিলো বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর। প্রথম ৬ ওভারে মাত্র ২টি চার আসে। ২টিই মারেন তামিম। আর শান্ত ছিলেন টেস্ট মেজাজে। সপ্তম ওভারে বিদায় ঘটে ১৩ বলে ১ রান করা  শান্তর। 

দলীয় ২০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ক্রিজে তামিমের সঙ্গী হন লিটন। বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খুলেছিলেন লিটন। পরের ২৮ বলে কোন বাউন্ডারি বা ওভার বাউন্ডারি মারেননি তামিম-লিটন। ১২তম ওভারে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন লিটন। তামিমও রানের চাকা সচল রাখেন।  

তবে ১৭তম ওভারে সুইপ করতে গিয়ে মোতির বলে আকিলকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তামিম। ৪টি চারে ৫২ বলে শেষ হয় তামিমের ৩৪ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় উইকেটে ৬২ বলে ৫০ রান যোগ করেন তামিম-লিটন। 

এরপর মাহমুদুল্লাহ-লিটন জুটি বাংলাদেশের স্কোর শতরানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ৬২ বল খেলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। লিটনের হাফ-সেঞ্চুরির পর ২৫তম ওভারেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। 

মোতির তৃতীয় ডেলিভারিতে লিটন ও পঞ্চম বলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আফিফ। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৫ বলে ৫০ রান করেন লিটন। মাত্র ২ বল খেলে খালি হাতে ফিরেন আফিফ। এতে ৯৬ রানে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। তখন জয়ের জন্য ২৫ ওভারে ৮৩ রানের দরকার পড়ে বাংলাদেশের। 

একই ওভারে ডাবল উইকেট পতনের পর সর্তক হয়ে পড়েন মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন। পরের ৩৬ বলে মাত্র ৮ রান। মোসাদ্দেকের ১টি করে চার-ছক্কায় রানের চাকা সচল হয়। তবে ১৪ রানে আউট হন মোসাদ্দেক। 

মোসাদ্দেকের বিদায়ে উইকেটে এসে স্বাচ্ছেন্দ্যে ৩টি চারে দ্রুত রান তুলতে থাকেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান। এরমধ্যে নিজের ভুলেই বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ। উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে পুরানের স্পিন বুঝতে না পেরে স্টাম্প হন ১টি চারে ৬১ বল খেলে ২৬ রান করা মাহমুদুল্লাহ। 

টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক যখন আউট হন তখন জিততে, ৬৫ বলে ৩৩ রানের প্রয়োজন ছিলো বাংলাদেশের। হাতে ছিলো ৪ উইকেট। এ অবস্থায় মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে জুটি বাঁধেন নুরুল। দেখেশুনে খেলে কোনরকম ঝুঁকি না নিয়ে, সপ্তম উইকেটে ৫৭ বলে ৩২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন নুরুল-মিরাজ। এই জুটিতে বাউন্ডারি আসে মাত্র মাত্র ১টি । 

৪টি চারে ৩৮ বলে অপরাজিত ৩২ রান করেন নুরুল। ৩৫ বলে অপরাজিত ১৬ রান করেন মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোতি ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েও দলের হার এড়াতে পারেননি। 

২৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন তাইজুল। সিরিজের সর্বোচ্চ ১১৭ রান করে সেরা খেলোয়াড় হন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম। 

ওয়ানডের আগে এই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইওয়াশ ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। 

স্কোর কার্ড : (টস-বাংলাদেশ)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস :

হোপ স্টাম্প নুরুল ব তাইজুল ২

কিং বোল্ড ব তাইজুল ৮

ব্রুকস এলবিডব্লু ব মুস্তাফিজুর ৪

কার্টি কত তামিম ব নাসুম ৩৩

পুরান বোল্ড ব তাইজুল ৭৩

পাওয়েল বোল্ড ব তাইজুল ১৮

পল স্টাম্প নুরুল ব তাইজুল ৬

আকিল বোল্ড ব মোসাদ্দেক ১

শেফার্ড বোল্ড ব নাসুম ১৯

মোতি অপরাজিত ৭

অতিরিক্ত (লে বা-১, ও-৪) ৫

মোট (অলআউট, ৪৮.৪ ওভার) ১৭৮

উইকেট পতন : ১/৯ (কিং), ২/১৫ (হোপ), ৩/১৬ (ব্রুকস), ৪/৮৩ (কার্টি), ৫/১১৭ (পাওয়েল), ৬/১২৫ (পল), ৭/১৪৬ (আকিল), ৮/১৫০ (পুরান), ৯/১৫৩ (মোতি), ১০/১৭৮ (শেফার্ড)। 

বাংলাদেশ বোলিং :

নাসুম : ৯.৪-১-৩৯-২ (ও-১),

মুস্তাফিজ : ৯-০-২৪-২,

তাইজুল : ১০-২-২৮-৫ (ও-২),

মোসাদ্দেক : ১০-১-২৩-১ (ও-২),

মিরাজ : ৮-০-৬১-০,

আফিফ : ২-১-২-০।

বাংলাদেশ ইনিংস :

তামিম ক আকিল ব মোতি ৩৪

শান্ত ক হোপ ব জোসেফ ১

লিটন ক এন্ড ব মোতি ৫০

মাহমুদুল্লাহ স্টাম্প ব হোপ ব পুরান ২৬

আফিফ বোল্ড ব আফিফ ০

মোসাদ্দেক ক সিলেস ব মোতি ১৪

নুরুল অপরাজিত ৩২

মিরাজ অপরাজিত ১৬

অতিরিক্ত (লে বা-১, ও-৫) ৬

মোট (৬ উইকেট, ৪৮.৩ ওভার) ১৭৯

উইকেট পতন : ১/২০ (শান্ত), ২/৭০ (তামিম), ৩/৯৬ (লিটন), ৪/৯৬ (আফিফ), ৫/১১৬ (মোসাদ্দেক), ৬/১৪৭ (মাহমুদুল্লাহ)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং :

জোসেফ : ১০-০-২৫-১ (ও-২),

শেফার্ড : ১০-০-৩৮-০ (ও-২),

আকিল : ১০-৩-৪৫-০ (ও-৩),

পাওয়েল : ১.৫-০-৮-০ (ও-২),

কার্টি : ০.১-০-১-০ (ও-২),

মোতি : ১০-২-২৩-৪ (ও-২),

পুরান : ৬.৩-০-৩৮-১ (ও-১),

ফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : তাইজুল ইসলাম (বাংলাদেশ)।

সিরিজ সেরা : তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)।

সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতলো বাংলাদেশ।  তথ্য সূত্র বাসস।