
ভারতের ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে টিপরা মোথা পার্টির যুব শাখা। ‘ভারতবিরোধী প্রচারণা’ ও দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সেভেন সিস্টার্স) নিয়ে বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক নেতার মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এ বিক্ষোভ করা হয়। ইয়ুথ টিপরা ফেডারেশনের (ওয়াইটিএফ) বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। খবর ডেকান হেরাল্ডের।
ওয়াইটিএফের সভাপতি সুরজ দেববর্মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের ভারতবিরোধী শক্তিগুলোকে মনে করিয়ে দিতে চাই—ভারতই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানকে একটি সার্বভৌম দেশে রূপান্তরিত করতে মাত্র ১৩ দিন সময় লেগেছিল।’ এ সময় আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
টিপরা মোথা পার্টির প্রধান প্রদ্যোত কিশোর মাণিক্য দেববর্মা সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার পর বাংলাদেশ (সহকারী) হাইকমিশনের বাইরে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানানো উত্তর-পূর্বের একমাত্র রাজনৈতিক দল হলো টিপরা মোথা পার্টি ও এর যুব শাখা ওয়াইটিএফ। জেগে ওঠো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা, আমাদের আসল লড়াই হওয়া উচিত নতুন ক্ষুদ্র পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) বিরুদ্ধে, একে অপরের বিরুদ্ধে নয়।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সেভেন সিস্টার্সকে ভারত থেকে আলাদা করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার (এসপি) নমিতা পাঠক বলেন, বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তার জন্য ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর)ও সিআরপিএফ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
গত বছর শত শত আন্দোলনকারী বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে ঢুকে পড়েছিল এবং নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় পরে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় বন্দুকধারীরা শরিফ ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ছয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভকারীরা বৃহস্পতিবার রাতে রাস্তায় নেমে আসে এবং দুটি সংবাদপত্রের কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ ছাড়া ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর চালায়। বিক্ষোভকারীরা বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনে ইট ও পাথর নিক্ষেপ করে, তবে কারও কোনো ক্ষতি হয়নি।