News update
  • Inqilab Monch Seeks Home Adviser’s Exit     |     
  • UN Calls for Calm in Bangladesh After Protest Leader’s Killing     |     
  • DMP issues 7 traffic directives for Osman Hadi’s Janaza     |     
  • Vested quarter fuelling chaos to impose new fascism: Fakhrul     |     
  • Hadi’s namaz-e-janaza at 2:30pm Saturday     |     

রিজার্ভ চুরির মামলায় ফিলিপিনে সাক্ষ্য দিচ্ছেন বাংলাদেশি কর্মকর্তারা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক অর্থনীতি 2023-02-01, 9:30am

45781e00-a157-11ed-8f65-71bfa0525ce3-312a8f811ff207bd2931ff4c401c7d421675222204.jpg




বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে ফিলিপিনের রাজধানী ম্যানিলায় গেছে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল।

সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের দু'জন এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগের আরো দু'জন কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেবেন বলে জানা গেছে।

প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন।

২০১৬ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার ৬২৩ ডলার চুরি হয়। নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সেই টাকা রক্ষিত ছিল। সেখান থেকে টাকা চুরি করে ফিলিপিনে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে এসব ঘটনায় সেখানে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে।

আজমালুল হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘’এখানে ফিলরেম মানি কর্পোরেশন নামে একটা মুদ্রা বিনিময় প্রতিষ্ঠান ছিল যারা আমাদের চুরির টাকা পেসোতে কনভার্ট করে বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছে, এখানে ওখানে পাঠিয়েছে, ক্যাসিনোতে দিয়েছে। সেই ফিলরেমের দু'জন শেয়ারহোল্ডার, তারা স্বামী-স্ত্রী, আমাদের অনুরোধে তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা করেছে ফিলিপিনের অ্যান্টি মানিলন্ডারিং কাউন্সিল।‘’

সেই মামলায় এখন সাক্ষ্য গ্রহণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিং করে যে কোটি কোটি ডলার ফিলিপিনে পাঠানো হয়েছিল, সেবিষয়েই বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল আদালতে সাক্ষ্যপ্রমাণ তুলে ধরছে।

‘’হ্যাকিংয়ের এভিডেন্স ওখান থেকে আসছে। হ্যাকিংয়ের ভিকটিম তো আমরা। টাকাটা হ্যাকিংয়ের পরে এখানে এসেছে, এখানকার খবর ওদের জানা আছে। আমাদের ওখানে হ্যাকিংয়ের পুরো তথ্যটা ওদের কাছে নেই। সেটাই তাদের দেয়া হচ্ছে। এখন প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য চলছে।‘’

তিনি জানান, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ফিলিপিনের ব্যাঙ্ক আরসিবিসি একটি মামলা করেছিল, সেটা বহু  আগেই খারিজ হয়ে গেছে।

চুরির ঘটনায় ম্যানিলায় আরও অনেকগুলো মামলা হয়েছিল। সেগুলোর কোন কোনটাতে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা সাক্ষ্য দিয়েছেন।

ফিলিপিনের আরসিবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছিল, তাতেও বাংলাদেশ সাক্ষ্য দিয়েছে। 

আরসিবিসি শাখা ম্যানেজার মায়া দেগুইতোসহ কয়েকজন কর্মকর্তার সাজাও হয়েছে।

তবে ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছিল, তা খারিজ হয়ে যায়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,  আন্তর্জাতিক একটি কনভেনশন রয়েছে, যার মাধ্যম একাধিক দেশ থেকে যৌথ আইনি সহায়তার সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগের আওতায় বাংলাদেশ ফিলিপিনের কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করার পর তারা বাংলাদেশের পক্ষে মামলাগুলো করেছে।

চুরি যাওয়া ডলারের মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে দুই কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। এরপর এফবিআইয়ের সহযোগিতায় ফিলিপিন থেকে দেড় কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে।

নিউইয়র্কের মামলা বিচারে গড়াতে পারে

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির মামলা বাতিলের জন্য ফিলিপিনের আরসিবিসি ব্যাংক, কিং অংসহ ১৮ ব্যক্তি যে দুটি আবেদন করেছিলেন, ১৩ই জানুয়ারি আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে।

এ বিষয়ে ২রা ফেব্রুয়ারির মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দিতে এবং মধ্যস্থতারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''আমরা তাদের আইনজীবীকে একটা চিঠি পাঠিয়েছি, কিন্তু এখনো কোন উত্তর পাইনি।''

''তারা যদি এই সময়ের মধ্যে উত্তর পাঠায়, তাহলে আলোচনা হবে। আর তারা যদি কোন উত্তর না দেয়, তাহলে মামলার ট্রায়ালের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।''

‘’পরবর্তী স্টেপ হবে, ওদের কাছে আমরা ডিসক্লোজার (তথ্য বিনিময়) চাইবো, আমাদের ডিসক্লোজার দেবো। সেই প্রসেসটা শুরু হয়ে যাবে। তারপরে শুনানির জন্য প্রস্তুতি নেবো,‘’ বলছেন আজমালুল হোসেন।

যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের মামলার নিয়ম অনুযায়ী, আইনগত প্রক্রিয়া শুরুর অংশ হিসাবে উভয় পক্ষ একে অপরের কাছে মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বা কাগজপত্র চাইতে পারে। সাধারণত দুই পক্ষের কাছে যেসব নথিপত্র আছে, সেগুলো বিনিময় করতে হয়। এসব তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলার আইনগত কার্যক্রম শুরু হবে।  

অনেক সময় কোনো কোনো পক্ষ বা ব্যক্তি তথ্য দিতে নাও চাইতে পারে, কিন্তু তার ব্যাখ্যা থাকতে হবে।

এই পুরো প্রক্রিয়ায় এক বছর সময় লেগে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন। সেক্ষেত্রে মামলার আসল বিচার কার্যক্রম শুরু হতে এক বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৯ সালের ৩১শে জানুয়ারি সেখানকার ডিসট্রিক্ট কোর্ট ফর দি সাউদার্ন ডিসট্রিক্ট অব নিউইয়র্কে আরসিবিসিসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে।

অভিযোগে বলা হয়েছে রিজার্ভের অর্থ চুরি করতে 'অনেক বছর ধরে বড় আকারের ও অত্যন্ত জটিল পরিকল্পনার' সাথে ব্যাংক এবং এসব ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন।

সেই মামলা বাতিল করার জন্য আরসিবিসিসহ ছয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল।

পরের বছর ২০শে মার্চ আদালত সেই আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে মামলাটি ফেডারেল কোর্টের পরিবর্তে স্টেট কোর্টে পরিচালনার আদেশ দেয়।

এরপর ২০২০ সালের ২৭শে মে নিউইয়র্কের কোর্টে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর বিবাদীরা এখানেও মামলা খারিজ করে দেয়ার জন্য আবেদন করে।

কয়েক দফা শুনানির পর ২০২২ সালের ৮ই এপ্রিল আংশিক রায়ে দুটি প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দেয় নিউইয়র্ক কাউন্টি কোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট জানিয়েছে, নিউইয়র্কের আদালত ১৩ই জানুয়ারি মামলা বাতিলের আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে ২রা ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দিতে এবং মধ্যস্থতার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। 

আদালত বলেছে, নিউইয়র্কের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ক্ষেত্রে আরসিবিসির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যোগসাজশ ছিল। না হলে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে এই অর্থ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।