News update
  • People eagerly await Tarique Rahman's homecoming Thursday     |     
  • Palm trees axed in Naogaon bypass for safety of electric line     |     
  • Stock market: DSE fails to sustain early gains, CSE extends rally     |     
  • Illegal arms, disinformation pose major challenges to BD polls: Officials     |     
  • BNP senses ‘dangerous conspiracy’ against democratic transition     |     

শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন

দেহ দান করে গেছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, তাই তার মরদেহের সৎকার হবে না

বিবিসি বাংলা সেলিব্রিটি 2025-02-15, 6:11pm

wr4234234-6e4c12f933abb59eb6b7b771ecadef2a1739621498.jpg

প্রতুল মুখোপাধ্যায়



বাংলা গানের প্রথিতযশা শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় শনিবার কলকাতায় মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এদিন।

হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীনই তার অপারেশন হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখতে হয়েছিল বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে।

দিন কয়েক আগেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী তাকে দেখতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে।

তার বিখ্যাত গান 'আমি বাংলায় গান গাই' ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার এক শ্রোতা জরিপে 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গান' এর তালিকায় ষষ্ঠ স্থান পেয়েছিল। মূল গানটি তার গলাতেই হলেও বিবিসির শ্রোতারা বাংলাদেশের শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবুর গলায় গাওয়া গানটিকেই ওই জরিপে পছন্দ করেছিলেন।

মি. মুখোপাধ্যায় দেহ দান করে গেছেন, তাই তার মরদেহের সৎকার হবে না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় দেবে।

কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে তার দেহ নিয়ে এসে কলকাতার সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত রবীন্দ্র সদনে রাখা হয়েছে। সেখানে হাজারো ভক্তদের সঙ্গেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও শেষ শ্রদ্ধা জানান।

সামাজিক মাধ্যমে মিজ ব্যানার্জী লিখেছেন যত দিন বাংলা গান থাকবে, ততদিন 'আমি বাংলায় গান গাই' বাঙালির মুখে মুখে ফিরবে।

রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান 'বঙ্গ-বিভূষণ' এবং 'সঙ্গীত সম্মান', 'সঙ্গীত মহা-সম্মান', 'নজরুল স্মৃতি পুরস্কার' সহ নানা সম্মান তাকে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের অগণিত ভক্তরা শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো পরে আবার তার দেহ ওই এসএসকেএম হাসপাতালেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।

বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম

এখনকার বাংলাদেশের বরিশালে ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তার বাবা ছিলেন স্কুলশিক্ষক।

তবে দেশভাগের পরে পরিবারের সঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন।

তার কোনো প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষা তার ছিল না। তবে তার পরিচিত জনেরা বলেন, গান যেন ছিল তার জন্মগত প্রতিভা।

চাকরি করতেন ব্যাংকে। জীবনযাপন ছিল একেবারেই সাদামাঠা। ঘনিষ্ঠতা ছিল বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে।

তবে কখনই তিনি সাড়ে তিন দশক রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা বামপন্থিদের কাছের মানুষ হয়ে ওঠেননি। বরং তাকে গান গাইতে দেখা যেত নকশালপন্থীদের জনসভা – পথসভায়।

পশ্চিমবঙ্গে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের কৃষক আন্দোলনের সময় থেকে মমতা ব্যানার্জীর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়।

'আমি বাংলায় গান গাই'

এই গানটিই প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের সব চেয়ে পরিচিত গান হয়ে উঠেছে গত তিন দশকেরও বেশি সময়ে।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন যে বাংলা ১৪০০ সালের পয়লা বৈশাখ বাড়িতে বসেই লিখে ফেলেন এই কালজয়ী গানটি। দিয়ে দেন সুর।

পরের বছর 'যেতে হবে' নামের অ্যালবামে গানটি প্রকাশিত হয়, আর সঙ্গে সঙ্গেই তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সেটি।

ওই গানটি ছাড়াও 'ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে', 'নিকোসে সিকেলে আফ্রিকা', 'ছোকরা চাঁদ–জওয়ান চাঁদ' এর মতো গানগুলোও মানুষের মুখে মুখে ঘুরতে শুরু করে গত শতাব্দীর নয়ের দশক থেকেই।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে বাংলা গানের ছক-ভাঙা শিল্পীদের মধ্যে অগ্রগণ্য কবীর সুমন লিখেছিলেন 'লোকটা নিজেই একটা গান, আস্ত একটা গান'।

তার গায়কীর বৈশিষ্ট্য হলো যন্ত্রানুসঙ্গের ব্যবহার প্রায় করেনই না তিনি।

কখনও তালি দিয়ে বা কখনও তুড়ি দিয়েই গান পরিবেশন করতেন তিনি– সঙ্গী ছিল তার হাতের নানা অঙ্গভঙ্গি।

তার গানের কথা এবং সুর– সবই ছিল সমাজ নিয়ে, মানুষকে ঘিরে।

গত শতাব্দীর নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও প্রতুল মুখোপাধ্যায় গান গাইছেন তারও বহু বছর আগে থেকে।

তখন অবশ্য এক শ্রেণির বামপন্থিদের মধ্যেই তার নাম ডাক ছিল। ওইসব রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর নানা পথসভা-জনসভায় গান গাইতে যেতেন তিনি।