
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী আজ আজ ১৩ নভেম্বর। ১৯৪৮ সালের এই দিনে বৃহত্তর ময়মনসিংহের নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জনপ্রিয় এই লেখক।
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে নানা কর্মসূচি পালিত হবে আজ বৃহস্পতিবার। এর অংশ হিসেবে রাত ১২টা ১ মিনিটে নুহাশপল্লী জুড়ে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। এ ছাড়া সকালে নুহাশপল্লীতে কেক কাটা এবং তার কবর জিয়ারত করা হবে। এসব অনুষ্ঠানে লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ছেলে নিশাত ও নিনিতসহ নুহাশপল্লীর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং হুমায়ন ভক্তরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল।
কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ছিলেন শিক্ষক, সমাজসেবী, গল্পকার, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, গীতিকার, চিত্রকর, চিত্রনাট্য লেখক, নাট্যনির্দেশক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রবন্ধকার ইত্যাদি। সাহিত্যের সব জায়গায় ছিল তার সরব উপস্থিতি।
তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চতর গবেষণা করে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেন। পেশাজীবনে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক। পরে অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে লেখালেখিতে নিয়মিত হন তিনি।
হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা তিন শতাধিক। তাঁর লেখা অন্যতম উপন্যাসগুলো হলো ‘নন্দিত নরকে’, ‘মধ্যাহ্ন’, ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘মাতাল হাওয়া’ ইত্যাদি। তাঁর লেখা উপন্যাসের জনপ্রিয় চারটি চরিত্র হলো হিমু, রুপা, মিসির আলী ও শুভ্র।
ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও গীতিকার হিসেবে হুমায়ূন আহমেদ যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তেমনি নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেও লাখো মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন।
ছোট পর্দা, বড় পর্দায় তার নানা সৃষ্টি বাঙালির মনে দাগ কেটে থাকবে হাজার বছর। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘আজ রবিবার’ ইত্যাদি।
হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে আগুনের পরশমণি, দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, শ্যামল ছায়া, চন্দ্রকথা ও ঘেটুপুত্র কমলা ইত্যাদি। শ্রাবণ মেঘের দিন, আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া। সর্বশেষ ঘেটুপুত্র কমলা চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মতো বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন বাংলাদেশের সাহিত্যের এই অপ্রতিদ্বন্দ্বী লেখক। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি এই লেখক নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তাকে গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে নিজ হাতে গড়া নুহাশপল্লীর লিচুতলায় সমাহিত করা হয়।