
Sharif Osman Hadi, the fearless frontline fighter of the July Uprising and spokesman of the Inqilab Manch -File Photo_11zon
হাদী হত্যার বিচারকে অন্যখাতে প্রবাহিত করতে সারাদেশব্যাপী পরিকল্পিত সন্ত্রাসের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত ও বিচার ও ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্ব থেকে অপসারণের দাবি
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী মো: ওসমান হাদী। গত ১২ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চ সংগঠনের এই নেতাকে গুলিবিদ্ধ করে আহত করা হয়। ৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। হাদীর হত্যাকে কেন্দ্র করে মধ্যরাত থেকে সারাদেশ পরিকল্পিত সন্ত্রাস সংঘটিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি অবিলম্বে হাদী হত্যার বিচারের পাশাপাশি তার হত্যার ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করে সারাদেশে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছে।
গণমাধ্যমের বরাতে আমরা জেনেছি, মধ্যরাতে একটি চিহ্নিত প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী কর্তৃক দেশের দুইটি গণমাধ্যম প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে ভাঙচুর এবং সাংবাদিকদের ভবনে বন্দী রেখে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। ডেইলি স্টারের অফিসে সাংবাদিক সহযোদ্ধাদেরকে সুরক্ষা দিতে যাওয়ার প্রাক্কালে নিউ এইজ সম্পাদক নূরুল কবীরের উপর হামলা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই গোষ্ঠীটি ছায়ানট ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে। অন্যদিকে ময়মনসিংহ ভালুকাতে পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানার শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে ‘ধর্ম নিয়ে কটুক্তি’ এর অভিযোগে ‘তৌহিদী জনতা’ পিটিয়ে মেরে ফেলে এবং তাঁর মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে। এই প্রতিটি ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চরম নিষ্ক্রিয়তা, গাফিলতি দেখা গিয়েছে। আমরা দেখেছি হাদীর হত্যার সাথে জড়িতদের ভারতে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে এবং তদন্তে কালক্ষেপণ করা হয়েছে। অন্যদিকে হাদীর হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুর্বপরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা সামলানোর ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থতার নিদর্শন দেখিয়েছে। জননিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ অপারগ ও ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে অপসারণের দাবি জানাই আমরা।
আমরা বলতে চাই, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী শ্রমিক হত্যা, আদিবাসী হত্যা, বাউল-মাজারের উপর হামলা, চিহ্নিত হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনা এবং মব সন্ত্রাসকে উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে ‘প্রেসার গ্রুপ’ হিসেবে বৈধতা দেওয়ার মাধ্যমে দেশে প্রতিক্রিয়াশীল সন্ত্রাসীদের পক্ষাবলম্বন করা হয়েছে। হাদীর হত্যা এবং গতকাল দেশব্যাপী চরম নৈরাজ্য ও আতঙ্কের ঘটনাগুলো এরই ধারাবাহিকতা। আমরা দেখতে পাচ্ছি, জনগণের ন্যুনতম গণতান্ত্রিক অধিকার ও নিরাপত্তা দিতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। নাগরিক তার অধিকারের কথা বলা হলে পুলিশী নিপীড়ন করা হচ্ছে একই ফ্যাসিবাদী কায়দায়, অথচ চিহ্নিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে প্রতিহত করার ক্ষেত্রে তাঁদের শৈথিল্য পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতি সমর্থনকে প্রমাণ করে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি হাদীর পরিকল্পিত হত্যাসহ দেশজুড়ে সংঘটিত নব্য ফ্যাসিবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য গণতন্ত্রমনা জনগণের সকল অংশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে
আনু মুহাম্মদ
মাহতাব উদ্দীন আহমেদ
মারজিয়া প্রভা
ফেরদৌস আরা রুমী
আকরাম খান
রাফিকুজ্জামান ফরিদ
আফজাল হোসেন
ফারহানা শারমীন ইমু
নওশাদ এহসানুল হক