
রফতানি বাজার বাড়াতে শুধু পাকিস্তান নয়, যেকোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ছাড় দিতে চান না তারা। এ অবস্থায় ঢাকা-ইসলামাবাদের নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জিইসি) বৈঠক ঘিরে পাকিস্তানের বাজারে শুল্কমুক্ত পণ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে জোর দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
পাকিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য দরকারি কাপড় ও সুতা সিমেন্ট আমদানি করেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। আর বাংলাদেশ থেকে মোটা দাগে যায় পাট, টেক্সটাইল, ফাইবার, ওষুধ ও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য, সবশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে আমদানি করেছে ৭৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। বিপরীতে দেশটিতে রফতানি হওয়া পণ্যের বাজার মূল্য মাত্র ৮ কোটি ডলার। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, পাকিস্তান যেহেতু বাংলাদেশ রফতানি বাড়াতে চায়, আমরাও দেশটিতে রফতানি বাড়াতে চাই।
তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে একমত দুই দেশ। দীর্ঘ ২০ বছর পর ঢাকায় নবম জিইসি বৈঠককে বাজার বাড়ানোর সুযোগ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রের সঙ্গে এমন দেশের ব্যাবসা-বাণিজ্যই তুলনামূলকভাবে সহজ, নিরাপদ ও টেকসই হয়, যেখানে পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো। কোনো বাধা দিয়ে এই দেশের সঙ্গে ব্যাবসা করা যাবে, আর ওই দেশের সঙ্গে করা যাবে না-বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এমন নয়।
দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তি, ওষুধ, কৃষি, উচ্চশিক্ষা ও জ্বালানি খাতে পারস্পরিক বিনিয়োগের সুযোগ দেখছেন অর্থনীতিবিদরাও। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, দুইটি দেশের মধ্যে পারস্পরিকভাবে লাভজনক অবস্থা তৈরি করতে হবে। এজন্য পাকিস্তানের ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলোর আলাপ-আলোচনায় গতি বাড়াতে হবে।
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের পাশাপাশি ঐতিহাসিক দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করারও তাগিদ দেন এই অর্থনীতিবিদ।