
ইউরোপের লিগগুলো অর্ধেক পথও পাড়ি না দিতেই এমএলএসের চলমান মৌসুম বিদায়ের পথে। আগামী বছর জুনে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোয় বসবে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। তার আগে আগে ইন্টার মায়ামি ও আর্জেন্টিনার হয়ে লিওনেল মেসির প্রস্তুতি কেমন হবে–তার রোডম্যাপ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আগামী বছর জুড়ে প্রিমিয়ার, ট্যুর, আর রোমাঞ্চের হাতছানিতে ভরপুর এক মৌসুম মিলিয়ে ইন্টার মায়ামি তাদের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসির ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি-সূচি নিশ্চিত করেছে। দক্ষিণ ফ্লোরিডার ক্লাবটি এমএলএসে তাদের আগামী মৌসুমের পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ করেছে। একই সময়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছে। ফলে, আগামী বিশ্বকাপে নিজের সম্ভাব্য অংশগ্রহণকে সামনে রেখে মেসি এখন জানেন প্রস্তুতির পথে কোন কোন ধাপ তাকে অতিক্রম করতে হবে।
ইন্টার মায়ামির জন্য আগামী বছরের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট হবে মায়ামি ফ্রিডম পার্কের উদ্বোধন, যা নির্ধারিত হয়েছে ৪ এপ্রিল। টানা পাঁচটি অ্যাওয়ে ম্যাচের পর সেদিন তারা প্রথমবারের মতো নিজেদের নতুন ঘরে ফিরবে। অস্টিনের বিপক্ষে এই ম্যাচ শুধু নতুন স্টেডিয়ামের উদ্বোধনই নয়, দলের সমর্থকদের জন্য এক নতুন যুগের আনুষ্ঠানিক সূচনা হিসেবেও চিহ্নিত হবে।
নতুন বছরের আরও একটি আকর্ষণ হলো সান ডিয়েগোর বিপক্ষে ম্যাচ, যাদের ২০২৫ সাল থেকে লিগের নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। তাদের প্রথম সফর নির্ধারিত হয়েছে ২০ সেপ্টেম্বর। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এই দলের উপস্থিতি এমএলএস সূচিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মে মাসটি দক্ষিণ ফ্লোরিডার দলটির জন্য ব্যস্ততম হতে যাচ্ছে। ২ তারিখে অরল্যান্ডোর বিপক্ষে রাজ্য ডার্বি এবং তার পরের দিন মিয়ামি ইন্টারন্যাশনাল স্পিডওয়েতে স্থানীয় ফর্মুলা–১ গ্রাঁ প্রি অনুষ্ঠিত হবে—যা সেই সপ্তাহান্তকে পরিণত করবে এক বিশেষ ক্রীড়া উৎসবে।
কনটিনেন্টাল প্রতিযোগিতা ও বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে এরপর লিগের সূচিতে থাকবে বিরতি। ইন্টার মায়ামি ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে অংশ নেবে। বিশ্বকাপের কারণে বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট বিরতি থাকবে ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত।
এপ্রিল মাসে দলটিকে দীর্ঘ ভ্রমণে নামতে হবে। ১৮ তারিখে কলোরাডো এবং ২২ তারিখে উটাহ সফর। উচ্চতা ও পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার কারণে এই দুই মাঠেই খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়তে পারে।
নিয়মিত মৌসুমে মধ্য-সপ্তাহে সাতটি ম্যাচ থাকবে এবং এটি শেষ হবে ৭ নভেম্বর শার্লটের বিপক্ষে 'ডিসিশন ডে'তে। এরপর নভেম্বরের ফিফা উইন্ডোর পর শুরু হবে প্লে–অফ, যার সূচি এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও এর মধ্যেই বিশ্বকাপের আগে নিজেদের পরিকল্পনা ঠিক করে ফেলেছে। মার্চের ২৩ থেকে ৩১ তারিখের মধ্যে স্পেনের বিপক্ষে ফাইনালিসিমা অনুষ্ঠিত হবে, যার সম্ভাব্য ভেন্যু লুসাইল। আর জুনের প্রথম সপ্তাহে বিশ্বকাপের আগেই এক বা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। এরপর তাদের মূল অভিযান শুরু হবে ১১ জুন। আগামী ৫ ডিসেম্বর বিশ্বকাপের গ্রুপ নির্ধারণী ড্র অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্বকাপের আগে মেসির ম্যাচের সূচি–
২ জানুয়ারি– ইন্টার মায়ামি-লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি
১ মার্চ– ইন্টার মায়ামি-ওরল্যান্ডো সিটি
৭ মার্চ– ইন্টার মায়ামি-এফসি ইউনাইটেড
১৪ মার্চ– ইন্টার মায়ামি-শার্লট এফসি
২১-৩১ মার্চ– আর্জেন্টিনা-স্পেন (ফাইনালিসিমা)
২২ মার্চ– ইন্টার মায়ামি-নিউইয়র্ক এফসি
৪ এপ্রিল– ইন্টার মায়ামি-অস্টিন এফসি (মায়ামি ফ্রিডম পার্কের অভিষেক)
১১ এপ্রিল– ইন্টার মায়ামি-নিউইয়র্ক রেডবুলস
১৮ এপ্রিল– ইন্টার মায়ামি-কলোরাডো র্যাপিডস
২৫ এপ্রিল– ইন্টার মায়ামি-নিউ ইংল্যান্ড রেভোলুশন
২ মে– ইন্টার মায়ামি-ওরল্যান্ডো সিটি
৯ মে– ইন্টার মায়ামি-টরেন্টো এফসি
১৩ মে– ইন্টার মায়ামি-এফসি সিনসিনাটি
১৭ মে– ইন্টার মায়ামি-পোর্টল্যান্ড টিম্বার্স
২৪ মে– ইন্টার মায়ামি-শিকাগো ফায়ার
১১ জুন– বিশ্বকাপ শুরু