চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। বিগত ১০ বছরের মধ্যে এবার পাসের হার সর্বনিম্ন। মোট ফেল করেছেন পাঁচ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। এবার সবচেয়ে বেশি ফেল এসেছে হিসাববিজ্ঞান, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ব্রিফ করেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল হক।
তিনি বলেন, দেশের ৯টি সাধারণ ও কারিগরি এবং মাদরাসা বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
ফলাফলে বিশ্লেষণে দেখা যায়, এইচএসসি পরীক্ষায় এবার শিক্ষার্থীর তিন বিষয়ে বেশি ফেল করেছেন। এইচএসসি পরীক্ষায় এবার বেশি ফেল করেছেন হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে। এবার এই বিষয়ে ফেল করেছেন ৪১ দশমিক ৪৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর ইংরেজিতে ফেল করেছেন ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী; আইসিটিতে ২৭ দশমিক ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
এ বছর মোট ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন। পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৬ জন। আর ছাত্র ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৪ জন। ছাত্রীদের গড় পাসের হার ৬২.৯৭ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৫৪.৬০ শতাংশ।
এবারের এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৭৮.৬৭ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫৫.৫২ শতাংশ ও মানবিক বিভাগে ৫০.৫৪ শতাংশ। মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৬ লাখ ৯৭ হাজার ২৫২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ২ লাখ ৬২ হাজার ৫৫২ জন এবং ছাত্রী ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ জন।
মানবিক বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন মোট ৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৮ জন; যার মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৩৪ জন এবং ছাত্রী ২ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৯ জন। পাসের হার ছাত্রদের ৪৯ দশমিক ৬৫ এবং ছাত্রীদের ৫১ দশমিক ১০ শতাংশ।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে অংশ নেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯০০ জন শিক্ষার্থী। ছাত্র ৯৮ হাজার ৫০৪ এবং ছাত্রী ৮০ হাজার ৩৯৬ জন। তাদের মধ্যে পাস করেছে মোট ৯৯ হাজার ৪৫১ জন। ছেলেদের পাসের হার ৫০ দশমিক ২২ এবং মেয়েদের ৬২ দশমিক ১৫ শতাংশ।
অন্যদিকে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার সর্বোচ্চ। এ বিভাগে মোট পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫৯ জন, ছাত্র ১ লাখ ২৩ হাজার ১০০ এবং ছাত্রী ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫৫৯ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে মোট ২ লাখ ৬ হাজার ৩৯৩ জন। ছেলেদের পাসের হার ৭৭ দশমিক ৫১ এবং মেয়েদের ৭৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
ফল পুনঃনিরীক্ষণ
এদিকে, ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd-এর মাধ্যমে ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে। আবেদন পদ্ধতি শিক্ষাবোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটে এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
এবারের এইচএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা গত ১৯ আগস্ট শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২১ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।